দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে অরিন্দম এবং কৈলাস। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
বিধানসভার খাতায়-কলমে তিনি এখনও কংগ্রেস বিধায়ক। কারণ, ২০১৬ সালে নদিয়ার শান্তিপুর থেকে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে জিতেছিলেন। নির্বাচনের বছরখানেকের মধ্যে সেই অরিন্দম ভট্টাচার্য তৃণমূলে যোগ দেন। গত কয়েক মাস ধরে জল্পনা চলছিল, এ বার অরিন্দম বিজেপি-তে যেতে পারেন। সেই জল্পনাকে সত্যি করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তেই যোগ দিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক। বুধবার দিল্লিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন।
বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরে অরিন্দম বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগানে আস্থা রেখে বিজেপি-তে যোগ দিলাম।’’ তাঁর অভিযোগ, লকডাউনের সময় অনেক আশা নিয়ে বাইরে কর্মরতরা পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছিলেন। কিন্তু তাঁদের কর্মসংস্থান করতে পারেনি রাজ্য। সেই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এখন বাংলায় শুধু ব্যক্তি আক্রমণের রাজনীতি হয়। এই পরিস্থিতি বদলের প্রয়োজন।’’
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে শান্তিপুর থেকে জিতেছিলেন অরিন্দম। প্রদেশ যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অরিন্দম হারিয়েছিলেন হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে-কে। কিন্তু ২০১৭ সালের জুন মাসে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। অরিন্দমের সঙ্গেই তৃণমূলে যোগ দেন নদিয়া জেলার আর এক কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর সিংহ। তবে, তৃণমূলে যোগ দিলেও অজয়-শিবিরের সঙ্গে অরিন্দমের সম্পর্ক কখনও মসৃণ হয়নি। গত বছর শান্তনু মাহাতো নামে স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল অজয়ের লোকজন। গত এপ্রিলে রামনবমীর দিন ‘করোনা নাশ যজ্ঞ’ও করেছিলেন অরিন্দম। এর পরেই তাঁর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
গত নভেম্বরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শান্তিপুরের রাস উৎসবে যোগ দিতে এলে অরিন্দম তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন। ঘটনাচক্রে সে সময়, করোনা পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা বিষয়ে টুইটারে রাজ্য সরকারকে ধারাবাহিক নিশানা করছিলেন ধনখড়। ওই ঘটনার পর অরিন্দমের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে শান্তিপুর থানার সামনে ধর্নাতেও বসেছিলেন অরিন্দম।
বুধবার দুপুরে হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় প্রথম জানান, দিল্লিতে বিজয়বর্গীয়ের উপস্থিতিতে দিল্লিতে বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন অরিন্দম। একই সঙ্গে মুকুলের উপস্থিতিতে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের কয়েক জন নেতা পদ্ম শিবিরে শামিল হন হেস্টিংসে। তিনি জানিয়েছেন, শীঘ্রই আরও কয়েক জন পরিচিত মুখ বিজেপি-তে যোগ দেবেন।