সিবিআইয়ের তদন্তের গতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টের পর এ বার আলিপুর কোর্টেও প্রশ্নের মুখে সিবিআই। তাদের তদন্তের গতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দেন, যতই দেরি হোক, তদন্ত শেষ করতেই হবে। ‘কারেন্ট’ না থাকলেও লিফ্ট উপরের তলায় নিয়ে যেতেই হবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়দের গ্রেফতারির মামলার শুনানি চলছে আলিপুর আদালতে। সেখানে জামিনের আবেদনও করেছেন। সেই মামলারও শুনানি চলছে। সেই প্রসঙ্গেই বিচারক চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তুললেন, হাই কোর্টের নির্দেশে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের নিয়ে কেন তদন্ত করা হচ্ছে না। যে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারক। তাঁর কথায়, ‘‘এতে তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।’’
এই শুনানি চলাকালীনই বিচারক সিবিআইয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘মণ্ডলকে গ্রেফতার করেননি কেন?’’ যদিও নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মণ্ডল কে, তা স্পষ্ট করে জানাননি বিচারক চট্টোপাধ্যায়। জবাবে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, ‘‘একই পদবির অনেককে পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ এর পরেই বিচারক ধমকের সুরে বলেন, ‘‘তদন্তে গতি আনতে হবে, বিশেষ পর্যায়ে পৌঁছতে হবে।’’ এই প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে একটি উপমাও দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘লিফ্ট উপরের তলায় নিয়ে যায় কারেন্ট। না থাকলে উপরের তলায় যাবেন কী ভাবে? কিন্তু যেতে তো হবে।’’
বিচারক সিবিআইকে তদন্তের নতুন অগ্রগতি নিয়েও জানতে চান। জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘একটু সময় লাগছে। কিন্তু দ্রুত অগ্রগতি হবে।’’ বিচারক বলেন, ‘‘তা হলে, অমিতাভ বচ্চনের মতো লক করে দিলাম।’’ তদন্তকারী বলেন, ‘‘লক করে দিন।’’ বিচারক জানান, তদন্তের একটি বিষয় নিয়ে অন্তত নিষ্পত্তি হোক। তাঁর কথায়, ‘‘একটা চেন অন্তত কমপ্লিট করুন। কে টাকা দিয়েছে, কাকে দিয়েছে, কাদের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, জানুন।’’