কারারক্ষীদের উপর আক্রমণের ঘটনার জেরে মালদহ জেলা সংশোধনাগার থেকে বহরমপুরে সরিয়ে দেওয়া হল কয়েক জন বন্দি-সহ বকুল শেখকে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আরও কয়েকজন বন্দিকে বহরমপুর ও বালুরঘাট সংশোধনাগারে সরানো হয়েছে।
গত শনিবার মালদহ জেলে বিচারাধীন বন্দিদের একাংশের হাতে আক্রান্ত হন তিন কারারক্ষী। তাঁদের জলের পাইপ, গাছের ডাল এবং ইট দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জখম কারারক্ষীদের ভর্তি করানো হয়েছিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ওই ঘটনায় একাংশ বন্দিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের ত্রাস বকুলের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে সংশোধনাগারে অভিযোগ নতুন নয়। খুন, তোলাবাজি, অপহরণ, ছিনতাইয়ের মতো প্রায় ৩০টি মামলা রয়েছে বকুলের বিরুদ্ধে। সংশোধনাগারেও তার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, বন্দিদের মারধর করা, হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি, এক বিচারাধীন বন্দি বকুলের ঘনিষ্ঠ দুই বন্দির বিরুদ্ধে বিচারকের কাছে অভিযোগ করেছিল। সেই ঘটনায় বিচারক জেল সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। এ ছাড়া, বছরখানেক আগেও তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছিল অন্য দুই বন্দি।
অভিযোগ, বকুলের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থাকত অন্য বন্দিরা। সংশোধনাগারের এক আধিকারিক রবিবার বলেন, “বকুল শেখকে মালদহ থেকে অন্যত্র সরানোর আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কারণ, বকুল জেলের মধ্যে চোরা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল।” তবে কারারক্ষীদের মারধরের ঘটনার পর তড়িঘড়ি তাকে অন্য জেলে পাঠানোর সিন্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি। এদিন সকালে সংশোধনাগারে পরিদর্শনে আসেন ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি নবীন সাহা। তিনি মালদহ জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন। তার পরই বকুল-সহ ২০ জন বন্দিকে মালদহ থেকে বহরমপুর ও বালুরঘাট জেলে সরানো হয়। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুল, রাজু শেখ, হাকিম শেখ, এস্তাজুল শেখ, ইমরান খান-সহ দশজনকে পাঠানো হয়েছে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। আর কানাইয়া যাদব ওরফে হুক্কা, ভোল্ট-সহ ১০ জনকে বালুরঘাটে পাঠানো হয়েছে।
সংশোধনাগারের এক কর্তা বলেন, “কয়েকজন বন্দির জন্য সংশোধনাগারের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।” এক বিচারাধীন বন্দির আত্মীয় বলেন, “খাবার, ঠান্ডায় কম্বল কেড়ে নিত জেলের কিছু গুন্ডা।”