কংগ্রেসের ‘দিদিকে বলো’।—নিজস্ব চিত্র।
ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে জনসংযোগ ফিরে পেতে তৃণমূল চালু করেছে ‘দিদিকে বলো’। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশেই প্রশ্ন তুলে সিপিএম পাল্টা করেছিল ‘দিদিকেই বলছি। এ বার প্রদেশ কংগ্রেস শুরু করল ‘দিদিকে বলছি’। আনুষ্ঠানিক ভাবে বুধবার ওই কর্মসূচির সূচনা করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়ে দিলেন, সনিয়া গাঁধী সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভানেত্রীর অন্তর্বর্তী দায়িত্ব নেওয়ার পরেও বাংলায় তৃণমূল সম্পর্কে তাঁদের অবস্থান ‘নরম’ করার প্রশ্ন নেই। বরং, এআইসিসি-র অনুমোদন নিয়েই বামেদের সঙ্গে জোট দীর্ঘস্থায়ী করতে তাঁরা আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন।
প্রথম দফায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ৭টি প্রশ্ন সাজিয়ে শুরু হল কংগ্রেসের ‘দিদিকে বলো’। দলের ২৮টি সাংগঠনিক জেলাই নিয়মিত দিদির জন্য প্রশ্ন তুলবে সামাজিক মাধ্যমে। সেই সঙ্গেই চলবে রাস্তায় নেমে প্রচার ও পথসভা। বিধান ভবনে এ দিন ওই কর্মসূচির সূচনা করে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘মানুষ আশা করছেন, দিদিকে বললে মুখ্যমন্ত্রী মন দিয়ে তা শুনবেন এবং প্রতিকার করবেন। দিদির উপরে বলার মতোও কেউ নেই। তাই আমরা নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন রেখে প্রতিবিধান চাইছি।’’ তৃণমূলের জমানায় বিভিন্ন জেলায় কংগ্রেসের ৭৪টি কার্যালয় এখনও শাসক দলের হাতে দখল হয়ে রয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। ওই কার্যালয়গুলির তালিকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন সোমেনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের যে সব কার্যালয় বিজেপি দখল করেছে, সেগুলি মুক্ত করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা হলে ওঁদের হাতে দখল হয়ে থাকা আমাদের কার্যালয়গুলো মুক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী সদিচ্ছার প্রমাণ দিন।’’
‘দিদিকে বলো’র উদ্বোধনী পর্বে কংগ্রেস প্রশ্ন করেছে: বাংলায় বিজেপিকে হাত ধরে নিয়ে আসার অপরাধ স্বীকার করবেন কি? মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফাঁসানো কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেবেন কি? গণতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙানো বা পঞ্চায়েত, পুরসভা দখলের পাপ স্বীকার করবেন কি? বিজেপি সংসদে যা করে, এখানে বিধানসভাতেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সে ভাবেই আলোচনা ছাড়া পাশ হবে কি?
সনিয়া ফের কংগ্রেসের হাল ধরার পরে বিভিন্ন মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে, বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেস ও তৃণমূল আবার জোট বাঁধতে পারে। দায়িত্ব নেওয়ার পরে সনিয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জেরে জল্পনা আরও গতি পেয়েছে। তৃণমূলের প্রতি নরম হওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘এই রকম কোনও বার্তা আমাদের কাছে নেই। এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈয়ের তত্ত্বাবধানে কালিয়াগঞ্জ, খড়গপুর ও করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে আমরা জোট করছি। এআইসিসি-র নির্দেশেই বামেদের সঙ্গে জোট দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি।’’