COVID-19

Students: করোনার পরে বহু পড়ুয়ার চোখে চশমা

তার প্রত্যক্ষ আঘাত কী ভীষণ, গত প্রায় দু’বছরে তা টের পেয়েছে গোটা বিশ্ব। অতিমারির পরোক্ষ মারও যে কম কিছু নয়, সেটা ধরা পড়ছে ক্রমশ।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২২ ০৬:১৪
Share:

ফাইল চিত্র।

তার প্রত্যক্ষ আঘাত কী ভীষণ, গত প্রায় দু’বছরে তা টের পেয়েছে গোটা বিশ্ব। অতিমারির পরোক্ষ মারও যে কম কিছু নয়, সেটা ধরা পড়ছে ক্রমশ। যেমন, করোনার তাণ্ডবের আগে তন্ময় বা ঋষিকা যে-দিন শেষ স্কুলে গিয়েছিল, তাদের চোখে চশমা ছিল না। দীর্ঘ অতিমারির পরে স্কুল চালু হতে দেখা গেল, তাদের চোখে চশমা।

Advertisement

করোনার প্রকোপে স্কুল বন্ধ থাকায় গত প্রায় দু’বছরে অনলাইন ক্লাসে কম্পিউটার ও মোবাইল-নির্ভর পড়াশোনা বেড়ে গিয়েছিল। অনলাইন ক্লাসে টানা তাকিয়ে থাকতে হয়েছে কম্পিউটার বা মোবাইলের পর্দার দিকে। আর তার জেরেই বহু পড়ুয়ার চোখের সমস্যা শুরু হয়েছে বলে চিকিৎসকদের অভিমত। চশমা পরতে হচ্ছে অনেক ছাত্রছাত্রীকেই।

বারুইপুরের বাসিন্দা সাউথ পয়েন্ট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র অনন্যরূপ হালদারের মা অনিতা মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলেকে লকডাউনের মধ্যেই চশমা নিতে হয়েছে। এই বয়সেই তার দু’‌চোখের পাওয়ার মাইনাস ১.৫। অনিতাদেবী বললেন, “টানা অনলাইন ক্লাসে চোখে চাপ পড়ত। দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধা হচ্ছিল।”

Advertisement

কেষ্টপুর দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা নাজ়রিন নাহার জানান, এখন বিভিন্ন সেকশনে আগের থেকে চশমা পরা মেয়ের সংখ্যা বেশি। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাসও জানান, অফলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার পরে অনেক বেশি পড়ুয়া চশমা পরে স্কুলে আসছে।

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মতে, গত দু’বছরে পড়াশোনার বাইরেও নানা কারণে মোবাইলে বুঁদ হয়ে থেকেছে পড়ুয়ারা। সেই কারণেও চোখের পাওয়ার বেড়েছে। ডিপিএস নিউ টাউনের অধ্যক্ষা সোনালি সেন বলেন, “কিছু বেশি পড়ুয়ার চশমা হয়েছে ঠিকই। তবে আমাদের স্কুলের অনলাইন ক্লাসের মাঝখানে চোখকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য দশ থেকে পনেরো মিনিট সময় দেওয়া হত। কিছু চোখের ব্যায়ামও দেখিয়েছি। সেগুলো করে পড়ুয়ারা উপকৃত হয়েছে।”

চোখের এই সমস্যা গ্রামাঞ্চলে কম বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সুন্দরবন এলাকার কুমিরমারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণয় মণ্ডল বলেন, “নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য আমাদের এলাকায় অনলাইন ক্লাস খুব বেশি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া অনেক পড়ুয়ার বাড়িতে একাধিক স্মার্টফোন না-থাকায় বা অনেক ক্ষেত্রে আদৌ না-থাকায় স্মার্টফোন কমই পেয়েছে পড়ুয়ারা।”

চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দত্ত বলেন, “যে পড়ুয়াদের চোখে কোনও সমস্যা ছিল না, তাদের অনেকের এখন মাইনাস পাওয়ার হয়েছে। এক দৃষ্টিতে ল্যাপটপ বা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকা এর অন্যতম কারণ। দেখা গিয়েছে, চোখের প্রাথমিক সমস্যা দেখা দেওয়ার পরেও করোনাকালে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement