প্রতীকী চিত্র।
এক সময় তাঁদের রোজনামচায় ছিল নাচ-গান-আবৃত্তি। জীবনের পথে এগোতে গিয়ে কখন হারায় সে সব। সংসার, চাকরি বা অন্য কাজে ম্লান হয়েছিল সে সব প্রতিভার দ্যুতি।
হারানো সেই প্রতিভা খুঁজে সকলের সামনে তুলে ধরতে এগোল ‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া।’ শনিবার বিকেলে মালদহের কলেজ অডিটোরিয়াম দুর্গাকিঙ্কর সদনে প্রতিযোগীদের সঙ্গে থাকবেন গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্যায়। মালদহ আঞ্চলিক পর্যায়ের সেই প্রতিযোগিতায় নাচ, গান, আবৃত্তিতে বিজয়ীরা কলকাতায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় যোগ দেবেন। আঞ্চলিক বিভাগে রয়েছেন মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মহিলারা।
ওই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে নভেম্বর মাস থেকে। সারা রাজ্য থেকে প্রতিটি বিভাগে হাজারের বেশি ভিডিয়ো-সহ ১০ হাজারের বেশি নাম নথিভুক্ত হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিযোগীকে গান, নাচ বা আবৃত্তির ৬০ সেকেন্ডের হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিয়ো পাঠাতে হয়েছিল বা ‘অদ্বিতীয়া’র ওয়েবপেজে তা আপলোড করতে হয়। ভিডিয়ো দেখে বিচারকেরা বেছে নেন আঞ্চলিক পর্যায়ের সেরাদের।
নাচে নজর কেড়েছেন ইংরেজবাজার শহরের নারায়ণী বন্দোপাধ্যায়। তাঁর ছেলে পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। লোকনৃত্য শিখেছিলেন তিনি। তার সুবাদে এক বার ‘ন্যাশনাল ফোক ফেস্টিভ্যালে’ রাজ্যের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ হয়েছিল। তিনি কথক, ভরতনাট্যম, ওড়িশিও শেখেন। কিন্তু বিয়ের পরে একটি স্কুলে নাটক শেখানো আর মহিলা পরিচালিত একটি মিষ্টির দোকান চালিয়ে, সংসার সামলে আর নাচ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে ইচ্ছাটা থেকে গিয়েছিল। শনিবার ‘অদ্বিতীয়া’য় সেই হারানো প্রতিভাই সকলকে দেখাতে তৈরি তিনি।
ইংরেজবাজার শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে কোতোয়ালি পঞ্চায়েতের জোত উপরপাড়ায় বাড়ি গৃহবধূ তুলিকা চৌধুরীর। ছোট থেকেই গান শিখেছিলেন। মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীত। ডিপ্লোমা কোর্সও করেছিলেন বিয়ের আগে। কিন্তু পরে সংসার, ছেলের লেখাপড়ায় সময় দিতে গিয়ে গানের জন্য সময় বের করা মুশকিল হয়ে যায়। এখন ছেলে বড় হয়েছে। কলকাতায় এমবিএ পড়ছে। ৫১ বছর বয়সে নজরুলগীতিও শেখা শুরু করেছেন তুলিকা। সেই প্রতিভা প্রকাশেরই সুযোগ দিল ‘অদ্বিতীয়া’। গানের প্রতিযোগিতায় ডাক পেয়েছেন। তাতেই ‘ভুবন মাতাতে’ প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি।
শৈশব থেকে চর্চা থাকলেও বিয়ের পরে হাইস্কুলে চাকরি, স্বামী আর পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে সংসার সামলানোয় আবৃত্তির থেকে দূরে চলে গিয়েছিলেন মালদহের সিঙ্গাতলার বসুন্ধরা মজুমদার। শনিবার অদ্বিতীয়ার মঞ্চ তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে পুরনো দিনে। ফের তাতে জীবনে ফিরবে ছন্দ, এমনই বিশ্বাস বসুন্ধরার।