দেগঙ্গায় মঙ্গলবার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
সদ্য ছড়ানো ‘ব্লিচিং পাউডার’ খুঁটে খাচ্ছিল মুরগিগুলো। বিপদ ঘটে যেতে পারে মনে করে তাড়িয়ে দিতে গিয়েছিলেন দু’একজন। কিন্তু ব্লিচিংয়ে গন্ধ নেই কেন? পরখ করে দেখা যায়, ব্লিচিং কোথায়, এতো স্রেফ আটা! তা-ও আবার রেশনের। ২ টাকা কেজি দরে কেনা।
ব্লিচিংয়ের বাজার দর ৮০-১০০ টাকা কেজি। ফলে কী জন্য ব্লিচিংয়ের বদলে আটা ছড়ানো হয়েছে, তা আর বুঝতে বাকি ছিল না গ্রামের লোকের।
মঙ্গলবার সকালে দেগঙ্গার হাদিপুর ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের আনোয়াদহ চটকাবেড়িয়া মাঝেরপাড়ার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে বা়ড়ি ছেড়ে পালান পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আনিয়ার বিবি ও তাঁর স্বামী মাফিজুল মণ্ডল। সিপিএমের টিকিটে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আনিয়ার। প্রশাসন সূত্রের খবর, একশো দিনের কাজে লোক নিয়োগ করে এলাকায় জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং। তার বদলে আটা ছড়ানোতেই গোলমালের সূত্রপাত। গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, শ্রমিকদের সঙ্গে ছিলেন মাফিজুল। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলার পরেও তিনি হম্বিতম্বি চালিয়ে যান। পরে অবশ্য হাওয়া গরম হচ্ছে বুঝতে পেরে এলাকা ছাড়েন।পঞ্চায়েতের সুপাভাইজার মামনি বিবি পরে স্বীকার করেন, ব্লিচিংয়ের বদলে আটাই ছড়ানো হয়েছিল। বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধানকে জানানো হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিডিও যুগ্ম সুমলচন্দ্র মণ্ডল।
এ হেন কারচুপির ঘটনায় হতভম্ব সাধারণ মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘মশা তো কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। নিজের এলাকায় ব্লিচিংয়ের বদলে আটা ছড়িয়ে ওঁরা যে সকলের বিপদ ডেকে আনছেন, এটুকু বোঝার ক্ষমতাও কি নেই?’’ যাদের জন্য ধরা পড়ল এমন কারচুপি, সেই হাঁস-মুরগির দলের অবশ্য এ সবে বিশেষ হেলদোল নেই। গোলমাল মিটে যাওয়ার পরেও দেখা গেল, পড়ে থাকা আটা খুঁটে খেতেই ব্যস্ত তারা!