পাশে আছি: আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সমর্থনে টিএমসিপি-র মিছিল। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরে ভর্তি এবং ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু হল বিশ্বভারতীতে। শুক্রবার রাতে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে এই দুই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হওয়ার কথা জানানো হয়। তবে পড়ুয়াদের বহিষ্কার, কর্মী ও অধ্যাপকদের সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হওয়ার আগে পর্যন্ত অবস্থান থেকে সরছেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। এ দিকে শনিবারই পড়ুয়াদের সমর্থনে বোলপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ-সহ তিনটি সংগঠন মিছিল করেছে।
৩০ অগস্ট দু’টি পৃথক নির্দেশিকা জারি করে বর্তমান পড়ুয়াদের সিমেস্টারের ফল প্রকাশ এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে আবেদনকারীদের ভর্তি প্রক্রিয়া অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে বিশ্বভারতী। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, উপাচার্য ঘেরাও হয়ে থাকায় ভর্তি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। উপাচার্য যে হেতু সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন কমিটি এবং অ্যাডমিশন কো-অর্ডিনেশন সেলের চেয়ারম্যান, তাই নিয়মিত উপাচার্যের মতামত, সম্মতির প্রয়োজন হয়। কার্যালয়ে উপাচার্যের সশরীর উপস্থিতিও প্রয়োজন। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ যেখানে অনলাইনে চলছে, সেখানে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্বাভাবিক কাজ স্থগিত হতে পারে না। আগামী দিনের পড়ুয়া এবং বর্তমান পড়ুয়াদের একাংশকে তাঁদের থেকে আলাদা করতে এমন সিদ্ধান্ত বলেও অভিযোগ করা হয়। সেই তর্কের সমাধান হয় বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বিশ্বভারতী সংক্রান্ত মামলার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে।
এ দিকে, হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও অবস্থানে অনড় আন্দোলনকারীরা। শনিবার সন্ধ্যাতেও উপাচার্যের বাসভবন থেকে ৫০ মিটার দূরে নতুন মঞ্চে অবস্থান চলে। পড়ুয়াদের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনেই নতুন জায়গা নির্বাচন হয়েছে। আন্দোলনও চলছে আদালতের নির্দেশ মেনে। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, ক্যাম্পাসে অবস্থান করে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা আদালতের রায়কে অবমাননা করছেন। এ দিন অবশ্য পড়ুয়াদের সমর্থনে মিছিল হয়েছে। সকালে বড় মিছিল করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। মাঝে ডিএসও, পরে বাংলা
পক্ষও মিছিল করে। ‘ফ্যাসিস্ট
বিরোধী বাংলা’ নাম একটি সংগঠনের পক্ষ থেকেও কলকাতার একাধিক নাট্যকার ও সাহিত্যিকরা অবস্থান মঞ্চে আসেন।
আন্দোলন ঘিরে চলছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন সিউড়িতে বলেন, ‘‘সবাই বিক্ষোভ দেখাতে পারেন। দিল্লিতেও তো এক বছর ধরে চলছে। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় সমস্যা করা উচিত না। উপাচার্যকে ঘেরাও করে, খেতে না দিয়ে, চিকিৎসা
করতে না দিয়ে যেটা হচ্ছিল সেটাও ঠিক না।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অবশ্য হুঁশিয়ারি, ‘‘উপাচার্য ঘরে বসে থাকবেন আর বড় বড় কথা বলবেন। বড় বড় কথা বলার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। এর পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভয়ঙ্কর আন্দোলন হবে।’’