প্রতীকী ছবি।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হতে বাকি আর মাত্র ছ’দিন। কিন্তু বিভিন্ন কলেজে অনেক আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেই সব আসন পূরণের জন্য আবার ভর্তির পোর্টাল খোলার বিষয়ে কোনও কোনও কলেজ-কর্তৃপক্ষ উচ্চশিক্ষা দফতরে আবেদন করছেন। কিন্তু এরই মধ্যে অভিযোগ উঠছে, বেশ কিছু কলেজ সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় না-থেকে নিজেদের মতো করে আবার পোর্টাল খুলে ভর্তির জন্য নতুন আবেদন জমা নিচ্ছে। বস্তুত, এটা আর অভিযোগের স্তরেও নেই। কারণ, একাধিক কলেজ জানিয়েছে, আসন ভরাতে তারা সত্যিই নতুন করে পোর্টাল খুলে আবেদন নিচ্ছে।
কী ভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠছে শিক্ষা শিবিরে। ওই শিবিরের একাংশের বক্তব্য, পোর্টাল খুলে ভর্তির আবেদন আবার নেওয়া যাবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার আছে শুধু উচ্চশিক্ষা দফতরের। তারাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। উচ্চশিক্ষা দফতর জানিয়েছিল, ভর্তির অনলাইন আবেদন নেওয়া যাবে ২৭ অগস্ট পর্যন্ত। প্রথম মেধা-তালিকা প্রকাশের দিন ধার্য করে দেওয়া হয়েছিল ৩১ অগস্ট। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করার কথা। স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে ১ অক্টোবর।
ফের পোর্টাল খুলে ভর্তির আবেদন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙনখালির সুকান্ত কলেজ, সরশুনা কলেজ, বেহালা কলেজ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ-সহ বেশ কয়েকটি কলেজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সুকান্ত কলেজ
২৭ অগস্টের পরে একাধিক বার পোর্টাল খুলে আবেদন নিয়েছে। সেখানকার টিচার ইনচার্জ অরুণাভ ঘোষ শুক্রবার জানান, কিছু আসন ফাঁকা পড়ে থাকায় তাঁরা আবার ভর্তির পোর্টাল খুলে আবেদন জমা নিচ্ছেন এবং এটা করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই। সরশুনা কলেজেও ২৭ অগস্টের পরে একাধিক বার পোর্টাল খুলে ভর্তির নতুন আবেদন নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অধ্যক্ষ শুভঙ্কর ত্রিপাঠী এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এ-সব জানাতে বাধ্য নই।’’
আবার পোর্টাল খোলার কারণ ব্যাখ্যা করে বেহালা কলেজের অধ্যক্ষা শর্মিলা মিত্র জানান, হয়তো কোনও পড়ুয়া ইংরেজি অনার্সের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর নাম ইংরেজির মেধা-তালিকায় ওঠেনি। সাংবাদিকতায় আসন ফাঁকা আছে। এখন সেই পড়ুয়া সাংবাদিকতায় ভর্তি হতে চাইছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। আসন যাতে খালি থেকে না-যায় এবং ইচ্ছুক পড়ুয়ারা যাতে ভর্তি হতে পারেন— সব দিক বিবেচনা করেই ফের পোর্টাল খুলে আবেদন করার সুযোগ দিচ্ছেন তাঁরা। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি জানালেন, তাঁর কলেজেও বেশ কিছু আসন খালি আছে। তাই তাঁরা নতুন করে পোর্টাল খুলে আবেদন নিয়েছেন। শুক্রবার পর্যন্ত এই আবেদন নেওয়া হয়েছে।
স্নাতক স্তরের খালি আসন পূরণের জন্য আবার ভর্তির পোর্টাল খোলার নির্দেশ দেওয়া হবে কি না, এ দিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কিছুই জানাননি। সুকান্ত, সরশুনা, বেহালা কলেজ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু— চারটি কলেজই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, পোর্টাল বার বার খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ কোনও নির্দেশ দেননি।