তড়িঘড়ি: কনভয় আসবে। তাই বেহাল রাস্তা সারাই চলছে। বাঁকুড়ায় শুক্রবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভাব্য জেলা সফরকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে। খানা খন্দে পিচ ঢেলে চকচকে করা হচ্ছে রাস্তাঘাট। কাটা হচ্ছে ঝোপঝাড়ও।
দু’দিন পুরুলিয়া জেলায় কাটিয়ে আগামী মঙ্গলবারই তাঁর বাঁকুড়ায় আসার কথা। তার আগে শুক্রবার প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিনই বুধবার ইঁদপুরের বাগডিহার মাঠে জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা। অনুষ্ঠান শেষ মুকুটমণিপুরে রাত্রিবাস করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিন বৃহস্পতিবার তাঁর মুকুটমণিপুরের বেদুয়া এলাকার মাঠে প্রশাসনিক জনসভা করা কথা। তবে শেষ মুহূর্তে তাঁর সফরের অনেক কিছুই নিরাপত্তার স্বার্থে বদলও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার রাজ্য রাজ্য পুলিশের ডিজি (নিরাপত্তা) বীরেন্দ্রর সঙ্গে বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা হেলিকপ্টারে চড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল পরিদর্শন করেন। এ দিন বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন কড়গাহিড়ের হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে রওনা দেন তাঁরা। প্রথমে বাগডিহা ও পরে বেদুয়ার সভাস্থলে যান তাঁরা।
যে পথে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই সব রাস্তায় জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করা হচ্ছে। সফরকে কেন্দ্র করে রাস্তাঘাট সাজিয়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। বাঁকুড়া শহরের জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম সংলগ্ন এলাকা থেকে ভৈরবস্থান পর্যন্ত আগাছার ঝোপঝাড়, রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা ঘাস সাফাই করার কাজ শুরু হয়েছে। শহরের তামলিবাঁধ এলাকা থেকে বাঁকুড়া পুলিশ লাইন, ভৈরবস্থান মোড়, লোকপুর হয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার খানাখন্দ বোজানোর কাজও চলছে জোর কদমে। এ দিন দিনভর ওই রাস্তার খানাখন্দ পিচ দিয়ে ভরাট করার কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য, “দীর্ঘদিন ধরে এই সব এলাকা ঝোপঝাড়ে ভরে থাকলেও এত দিন পুরসভা পরিষ্কার করেনি। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় দিনের পর দিন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে আমাদের। এখন মুখ্যমন্ত্রী আসছেন বলেই টনক নড়েছে সবার।” বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের অবশ্য বক্তব্য, “রুটিন মাফিক যেমন কাজ হয়, তেমনই হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতাকে বাঁকুড়া পুরসভা বরাবরই প্রাধান্য দেয়। বিশেষ কোনও কারণে এই কাজ হচ্ছে এটা বলা ভুল।” যদিও কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। বিজেপি-র রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “এই শহরে ডেঙ্গি, স্ক্রাব টাইফাসের জেরে মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এত দিন ঝোপঝাড় পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হল না। দলনেত্রীর কোপে পড়লে চাকরি যাওয়ার ভয়েই এখন সম্বিৎ ফিরেছে পুর ও প্রশাসনিক কর্তাদের।”