বুধবার হুগলির জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হুগলি জেলার সমস্ত আলু চাষিকেই ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত নিল হুগলি জেলা প্রশাসন। ইসরো অ্যাপের তোলা স্যাটেলাইট ছবি দেখার পরই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
প্রশাসনের কাছ থেকে সঠিক ক্ষতিপূরণ পাননি বলে দাবি করে হুগলি জেলার বিভিন্ন ব্লক-সহ কৃষি দফতরে বিক্ষোভ দেখান আলু চাষিরা। এর পরেই ন়ড়েচ়ড়ে বসে প্রশাসন। বুধবার হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়ার দফতরে এ নিয়ে বৈঠক হয়। তাতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না, জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়-সহ জেলা কৃষি, সমবায় দফতর এবং বিমা সংস্থার আধিকারিকেরা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, হুগলি জেলায় প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। চলতি মরসুমের শুরুতে প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর বীজ পোঁতা হয়ে গিয়েছিল। তবে অকালবর্ষণে তা নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকদের বিমা করানো থাকলেও ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলে অভিযোগ। এই অভিযোগে শুরু হয় বিক্ষোভ। আলু চাষিদের দাবি, ১,৮৪,২৩৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মাত্র ৭৮ হাজার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। চাষিদের বিক্ষোভের পর বাস্তব চিত্র খতিয়ে দেখে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের দাবি, ইসরোর অ্যাপে কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যা হয়েছে। সে জন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আসল চিত্র ধরা পড়েনি। বুধবারের বৈঠকে এই অ্যাপের সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জেলার আরও ১ লক্ষ ৬ হাজার চাষি বিমার টাকা পাবেন। অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত সব চাষিকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বৈঠকের পর মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘বিমার টাকা দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য কৃষিমন্ত্রী, কৃষি উপদেষ্টার কাছে আমরা আবেদন করেছিলাম। বিমা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা তৈরি করেছিল, তার থেকে অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৬ হাজার চাষি ক্ষতিপূরণ পাবেন। শস্য বিমার আওতায় যাঁরা রয়েছেন অর্থাৎ যাঁরা অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই যাতে বিমার টাকা পান, তা দেখতে হবে। আশা করছি, দিন পনেরোর মধ্যেই ক্ষতিপূরণে টাকা পেয়ে যাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।