অধীর চৌধুরী (বাঁ দিকে) এবং মল্লিকার্জুন খড়্গে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বে মুখ বদল হয়েছে পক্ষকাল পেরোয়নি। বাংলায় কংগ্রেস কোন পথে এগোবে, সেই প্রশ্নে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। এরই মধ্যে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীকে ডেকে আলোচনায় বসলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। সূত্রের খবর, বাংলায় বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস যে অবস্থান নিয়ে চলছে, তাতে কোনও পরিবর্তনের বার্তা সর্বভারতীয় সভাপতির তরফে দেওয়া হয়নি। কংগ্রেসের স্বার্থে অধীরকে তাঁর কাজ করে যাওয়ার পরামর্শই দিয়েছেন খড়্গে।
দিল্লিতে খড়্গের বাড়িতে গিয়ে শুক্রবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন অধীর। সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে তাঁর অবশ্য আগেই দেখা করার কথা ছিল। অধীর দিল্লিতে আছেন শুনে এ দিন তাঁকে ডেকেছিলেন খড়্গে। অধীর একে ‘ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ’ বলে বর্ণনা করলেও বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি বাংলার এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দু’জনের কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে বাংলায় যে ভাবে নাগরিক প্রতিবাদ মাথা তুলেছে, কংগ্রেসও সাধ্যমতো আন্দোলনে আছে, সে সব বিষয়ই আলোচনায় এসেছিল। লোকসভা ভোটে রাজ্যে সাফল্য পেলেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যে কিছুটা কোণঠাসা হয়েছে, উঠেছে সেই প্রসঙ্গও। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিষয়ে প্রাক্তন সভাপতি ও সর্বভারতীয় সভাপতির মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
বৈঠকের পরে অধীর বলেছেন, ‘‘খড়্গেজি’র সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। যখন লোকসভায় দলের নেতা ছিলাম, উনি তখন রাজ্যসভার নেতা। সংসদ চলাকালীন দলের কৌশল নিয়ে প্রায় রোজই কথা হত। এ বার দেখা হতে অনেক কথাই হয়েছে। বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন, আমার হারের কারণও জানতে চেয়েছেন।’’ বিজেপি ও তৃণমূলের সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কারণে বহরমপুরে তাঁকে হারতে হয়েছে, এই অভিযোগ আগেই করেছিলেন অধীর। সম্প্রতি তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরও মন্তব্য করেছেন, সাম্প্রদায়িক ভাগাভাগি না-করলে সেখানে তাঁরা জিততে পারতেন না। ধর্মীয় তাস খেলার কৌশল কবুল করে নিয়ে শাসক দলের বিধায়কের এমন মন্তব্যের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, রাজ্যপাল ও রাজ্য বিধানসভার স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়। নবনিযুক্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার তার আগেই জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে বহরমপুরে তৃণমূলের ওই কৌশলের সমালোচনা করে প্রস্তাব নিয়েছিলেন। ভাগাভাগির এই খেলার কথা খড়্গেকেও জানিয়েছেন অধীর। প্রাক্তন সাংসদের কথায়, ‘‘এখন তো তৃণমূলের বিধায়কও বলছেন, কী হয়েছে। খড়্গেজি শুনে অবাক হয়েছেন।’’