প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার আর্জি নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করলেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ‘স্পর্শকাতর’ বুথের তালিকা দিয়ে আগে থেকে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানালেন তিনি। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য অধীরদের কটাক্ষ করেছে।
দিল্লিতে সোমবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে সাগরদিঘির উপনির্বাচন নিয়ে কথা বলেন অধীরবাবু। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশনের ‘ফুল বেঞ্চ’ই ছিল আলোচনায়। পরে অধীরবাবু বলেন, ‘‘বাংলায় স্থানীয় স্তরের কোনও ভোট নির্বিঘ্নে হয় না। শুধু লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ মোটামুটি ঠিক ভাবে ভোট দিতে পারেন। কমিশনের কাছে অনুরোধ, সাগরদিঘির উপনির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হোক। ভোটের আগের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠালে হবে না, কিছু দিন আগে থেকে বাহিনী এলাকায় থাকলে মানুষ ভরসা পাবেন।’’ ওই কেন্দ্রের ৫৯টি ‘স্পর্শকাতর’ বুথের তালিকা কমিশনে জমা দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন করার দাবি জানিয়ে যে চিঠি কমিশনকে প্রদেশ সভাপতি দিয়েছিলেন, সেই প্রসঙ্গও উঠেছিল আলোচনায়। কমিশন অধীরবাবুকে জানিয়েছে, চিঠি তারা পেয়েছে। কিন্তু আইনি জটে এখন সেখানে ভোট করা যাচ্ছে না।
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘গত ২০২১ সালে সিপিএম এবং আইএসএফ-কে সঙ্গে নিয়ে, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী পেয়েও কংগ্রেসকে শূন্যে পৌঁছে দিয়েছেন অধীরবাবু! তিনি কম কথা বললে হয়তো কংগ্রেসের এই দুর্দশা ঘুচবে!’’
সাগরদিঘি কেন্দ্রে অধীরবাবুর প্রস্তাব মেনে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে সমর্থন করছে বামফ্রন্ট। তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। ‘তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জোটবদ্ধ লড়াইয়ে শামিল হওয়ার জন্য’ বাম নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে। বহরমপুরে এ দিন মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএমের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সাগরদিঘির মতো কি পঞ্চায়েতে ভোটেও কংগ্রেসের হাত ধরে লড়াই হবে? জবাবে সেলিম বলেছেন, ‘‘আগে পঞ্চায়েত ভোট আসুক। তখন এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তবে তিনি জানান, বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী সমস্ত শক্তিকে একত্রিত হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা।