(বাঁ দিকে) দ্রৌপদী মুর্মু। অধীর চৌধুরী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার রাষ্ট্রপতিকে এই চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন অধীর। তার পর থেকেই যে মুর্শিদাবাদ-সহ গোটা রাজ্যে কংগ্রেস কর্মীরা শাসকদল তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন, মূলত সেই বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শাসকদলের কটাক্ষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পরামর্শেই রাষ্ট্রপতিকে এমন চিঠি লিখেছেন অধীর।
রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে অধীর বলেছেন, ‘‘বাংলায় আমাদের অরাজকতার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত ও পুরসভায় ভোট হয়েছিল। সেখানে সাধারণ মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। এমনকি, বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিল করতেও দেওয়া হয়নি। ভোটের দিন চলে শুধু লুট আর লুট। এ ভাবেই একের পর এক নির্বাচন জিতে চলেছে শাসকদল। এটাই এখন বাংলার ভোটের রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে হয়তো কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় কিছু এলাকায় মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। কিন্তু সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভাবে ভোট হয়েছে, এমনটা জোর দিয়ে বলা যাবে না। ভোটে এতগুলি আসন জিতেছে, তা সত্ত্বেও সন্ত্রাস চলছেই। জোর করে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের শাসকদলে যোগদান করানো হচ্ছে। পুলিশ দিয়ে হুমকি দিয়ে, গুন্ডাবাহিনী দিয়ে ভয় দেখিয়ে দলবদল করানো হচ্ছে।’’ চিঠিতে জলপাইগুড়িতে এক কংগ্রেস কর্মীর খুনের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা দিল্লিতে এসে সাধু হয়ে যান আর বাংলায় ফিরেই স্বমহিমায় ফিরে বিরোধীদের ওপর হামলা চালান।’’
ঘটনাচক্রে, অধীর যে দিন এই চিঠি রাইসিনা হিলসে পাঠিয়েছেন, সে দিন দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে রাজধানীতে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধীরের দাবি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে জমি নিয়ে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি চলছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীই বলেছেন ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে জমি দফতরে। ভুয়ো তথ্য ও নথি তৈরি করে জমি কেলেঙ্কারি চলছে বাংলায়।’’
অধীরের চিঠি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে শাসকদল। রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘আসলে অধীরবাবু চিঠিটি লিখেছেন শুভেন্দুর পরামর্শে। এ রাজ্যে বাম এবং কংগ্রেসের বিরোধিতার সুর ঠিক করে দিচ্ছে বিজেপি। তাই তো বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে অধীরবাবুদের কখনও সরব হতে দেখা যায় না।’’ জলপাইগুড়িতে কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পারিবারিক কারণেই হয়তো ওই কংগ্রেস কর্মী মারা গিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কয়েক জন গ্রেফতার হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রাখুন। প্রকৃত খুনি গ্রেফতার হবেই।’’