—প্রতীকী ছবি।
প্রায় এক দশক ধরে উত্তর ২৪ পরগনা ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মানবপাচার করার অভিযোগে এনআইএর হাতে ধরা পড়েছে সঞ্জীব দেব, বিকাশ সরকার ও রাজু রুদ্র। অভিযোগ, শুধু এ রাজ্যে প্রবেশ করানোই নয়, অনুপ্রবেশকারীদের এখানে স্থায়ী বাসিন্দা করার জন্য যা যা প্রমাণপত্র দরকার, তার ব্যবস্থাও করত তারা।
এনআইএর দাবি, ধৃত তিন জন আসলে বাংলাদেশের বাসিন্দা। সঞ্জীব এবং রাজু নয়ের দশকের মাঝামাঝি বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ঢুকে এ দেশের জন্মের শংসাপত্র, ভোটার কার্ড এবং পাসপোর্ট তৈরি করে ২০০৫ থেকে এ রাজ্যে বসবাস করতে থাকে। সঙ্গে চলতে থাকে বাংলাদেশ নাগরিকদের এ দেশে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া। বিকাশ ঢোকে পরে। তদন্তকারীদের দাবি, গত দু’দশকে কয়েক হাজার মানুষকে এরা এ রাজ্যে প্রবেশ করতে সাহায্য করছে। প্রথমে তাদের আত্মীয় বলে ভাড়া বাড়িতে তুলত। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যে জন্মের শংসাপত্র তৈরি করে তা দেখিয়ে রেশন কার্ড বানাত। এ ভাবেই ভোটার কার্ড এবং পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলা হত। পাসপোর্ট দেখিয়ে প্যান এবং আধার কার্ড বানাতে বেশি সময় লাগত না।
গোয়েন্দাদের দাবি, ওই চক্রটিকে সরকারি কর্মী ও শাসকদলের প্রতিনিধিদের একাংশ সাহায্য করত। ধৃতদের জেরা করে ওই প্রতিনিধি এবং আধিকারিকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে এনআইএ সূত্রের দাবি। ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে ট্রানজ়িট রিমান্ডে শুক্রবার অসমের গুয়াহাটি নিয়ে গিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, সঞ্জীব অনুপ্রবেশকারীদের টাকা দিয়ে সাহায্য করত। বাংলাদেশে মানবপাচার চক্রের সদস্যদের সঙ্গে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করত। তার বাড়ি থেকে দু’দেশের কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। রাজু এ দেশের নথি তৈরিতে সাহায্য করা। অনুপ্রবেশকারীদের গাইড করে স্থানীয় বাসস্থানে পৌঁছে দেওয়া ছিল বিকাশের কাজ।
উল্লেখ্য অসমে বেআইনি প্রবেশ করতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের একটি দল ধরা পড়ে যায়। তার তদন্তে নেমেই এরাজ্যের ওই তিনজনের নাম উঠে আসে।