কেন্দ্রের ‘অসংসদীয় শব্দ’-এর তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সংসদে বেশ কিছু শব্দের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় লোকসভা সচিবালয়ের তরফে। প্রকাশ করা হয় ‘অংসসদীয় শব্দ’-এর তালিকা। সেই তালিকা প্রসঙ্গে এ বার নিজের মত স্পষ্ট করে জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কী বলব, তা কি ওঁরা ঠিক করে দেবেন? ব্রিটিশ শাসনে ভারতের মানুষ এতটা পরাধীন ছিলেন না, যা আজকের দিনে এই সরকারের আমলে হয়েছে। সরকার চলছে একেবারে স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায়।’’
বৃহস্পতিবার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে দাঁড়িয়ে ক্ষোভের সুরে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার থেকেও দেশে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যিনিই বিরোধিতা করছেন, তাঁর পিছনে তদন্তকারী সংস্থা ভিড়িয়ে দিচ্ছে। বাংলার টাকা আটকে রাখছে বিজেপি। (রাজ্যের) পঞ্চায়েত মন্ত্রী (পুলক রায়) বার বার বলছেন, কোনও দুর্নীতি নেই। ওঁরা নিজেরাই কনফিউজ হয়ে বসে আছেন আর বাংলার মানুষকে তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছেন। দিল্লিতে গিয়ে সংসদের অধিবেশনে নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানাব।’’
সংসদীয় শব্দ তালিকার পাশাপাশি নয়া সংসদ ভবনের ছাদে বসানো জাতীয় প্রতীক নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘প্রতীক-নাম সবই তো এরা বদলে দিচ্ছে। যে ভাবে সব কিছু প্রকাশ্যে আনা হল, এটা কোনও পদ্ধতি নয়। প্রতীকের উদ্বোধন হল, অথচ সেখানে আমন্ত্রিত নন রাষ্ট্রপতি। তাঁকেও এরা যোগ্য সম্মান দিল না।’’ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির শিবিরের বক্তব্য, সংসদের ‘অসংসদীয়’ শব্দের তালিকা নিয়ে যদি তৃণমূলের কোনও আপত্তি থেকে থাকে, তা হলে তা জানানোর নির্দিষ্ট মঞ্চ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন বেশ কিছু শব্দের প্রয়োগের উপর বুধবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় লোকসভা সচিবালয়ের তরফে। প্রকাশিত ‘অংসসদীয় শব্দের’ তালিকায় রয়েছে, ‘লজ্জাজনক’, ‘অপব্যবহার’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মতো বেশ কিছু শব্দ। সংসদের অধিবেশনে ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খলিস্তানি’, ‘বিনাশপুরুষ’। সাংসদদের জন্য প্রকাশিত পুস্তিকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ‘জুমলাবাজি’, ‘কোভিড স্প্রেডার’, ‘খুন সে ক্ষেতি’ (রক্ত দিয়ে চাষ), ‘স্নুপগেট’-এর মতো কিছু শব্দবন্ধ। ঘটনাচক্রে, প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করতে এর মধ্যে একাধিক শব্দ ও শব্দবন্ধ অতীতে বিরোধীরা প্রয়োগ করেছেন। সংসদে বিরোধী স্বরের কণ্ঠরোধ করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছে বিরোধীদের একাংশ।