সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পরস্পরের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে নানা রকম চর্চা চালু আছে। তা ডিঙিয়েই এ বার নিজের জনসংযোগ যাত্রায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (ববি)-কে সঙ্গে চাইলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরভোটের সময়ে শুরু সেই চর্চা থেকে পার্কিং ফি নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের পরে ববিকে অভিষেকের এই ‘ডাক’ ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।
মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ববির সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের সম্পর্কের টানাপড়েন তৃণমূল কংগ্রেসে বরাবরই চর্চায় রয়েছে। এই অবস্থায় তাঁকেই নিজের কর্মসূচিতে চেয়ে অভিষেকের উদ্যোগ নতুন বিন্যাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে দলের অন্দরে। জানা গিয়েছে, জনসংযোগ কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত আলাদা ভাবে অভিষেকের এই ডাক আর বিশেষ কেউ পাননি। সিউড়িতে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও পূর্ব মেদিনীপুরে নেতার অধিবেশন মঞ্চে বক্তৃতা করেছেন রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তার পর ববিই। সূত্রের দাবি, সম্প্রতি ববিকে ফোনে অভিষেক জানান যে, তাঁর কর্মসূচিতে ববিকে থাকতে হবে। ববি রাজি হন। জানিয়ে দেন, বললে তিনি নিশ্চয়ই থাকবেন।
কলকাতায় গত পুরভোটের সময় থেকেই ববি ও অভিষেকের টানাপড়েন সামনে চলে আসে। দলের একাংশের মতে, এ বার কলকাতার মেয়র পদে নতুন মুখ আনতে চেয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই ববিকে প্রথমে প্রার্থী ও পরে মেয়র করা হয়। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি কলকাতা শহরে গাড়ির পার্কিং ফি নিয়েও দু’তরফের মতপার্থক্য একেবারে প্রকাশ্যে এসে পড়ে। বর্ধিত ফি নিয়ে অভিষেকের আপত্তি জানাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল। সেই সাংবাদিক বৈঠকে বসে মেয়র হিসেবে ববির গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের কথাও কুণাল জানিয়ে দিয়েছিলেন। পরে সেই পথেই হেঁটেই বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করতে হয়েছিল ববিকে। তবে দলের সেই অবস্থানে তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা-ও গোপন করেননি ববি।
দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এই পরিস্থিতিতে দলের অন্দরে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল, তা দূর করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন মমতা স্বয়ং। পার্কিং-বিতর্কের পরে মালদহে প্রশাসনিক সভায় ববিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জনসংযোগ কর্মসূচিতে তখন সেখানে অভিষেকও ছিলেন। অভিষেকের এই ফোন মমতারসেই উদ্যোগের রেশ বলে মনেকরছেন অনেকে।