ফাইল চিত্র।
মুখের কথায় নয়, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি পর্বে গোটা রাজ্যে দলের নেতা-কর্মীদের কাজের লিখিত রিপোর্ট হাতে নিয়ে বসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একেবারে নীচের তলা থেকে দায়িত্ব সম্পর্কে প্রত্যেক নেতা-কর্মীর ‘সক্রিয়তা’র নথি হিসেবেই এই রিপোর্ট কাজে লাগানোর কথা ভাবা হয়েছে। একে মন্ত্রিসভার মতো সাংগঠনিক দায়িত্বেও মুখ বদলের প্রক্রিয়ার সূচনা বলে মনে করছেন দলের একাংশ।
একেবারে কর্পোরেট সংস্থার ধাঁচে বুথ, ব্লক থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের কাজের রিপোর্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের জেলায় জেলায় দলীয় নেতৃত্ব ও বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের এই বার্তা দেওয়া শুরু হয়েছে। ওই বৈঠকগুলিতেই দলের এই নতুন পরিকল্পনার কথা জনিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, সংগঠনের সক্রিয়তা যাচাই করতে একেবারে নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত সক্রিয়তার রিপোর্টই চেয়েছেন তিনি। কে, কোথায় কী ভাবে দলের সঙ্গে আছেন এবং কাজ করছেন, লিখিত রিপোর্টে তা-ই উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি জেলা স্তরে সংগঠনে বহু গুরুত্বপূর্ণ রদবদল করেছে তৃণমূল। সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদে অনেক জেলাতেই বহু নতুন মুখ এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ব্লক ও অঞ্চল স্তরেও সেই বদলের প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই রদবদলকে মাথায় রেখে সমীক্ষা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বৈঠকগুলিতে সংশ্লিষ্ট জেলার নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সে ব্যাপারে মত নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে শাখা সংগঠনের জেলা নেতৃত্বেও বড় রকমের রদবদলের কথা ভাবা হয়েছে। ওই রকম আরও একটি সমীক্ষায় শাখা সংগঠনের অবস্থাও বুঝে নিতে চেয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। এই দায়িত্ব বণ্টনের কাজ শেষ হলেও দল ও শাখা সংগঠনের কাছ থেকে ওই রিপোর্ট নেওয়া শুরু হবে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির বাছাই করা সাংগঠনিক পদাধিকারী ও এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে বৈঠক করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। পরবর্তী পর্যায়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি নিয়েও এই বৈঠক শুরু হয়েছে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলিতে পঞ্চায়েত ভোট নিয়েও দলের মনোভাব কিছুটা স্পষ্ট করেছেন অভিষেক। এবং একেবারে নীচের তলা থেকে চাওয়া এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করতে পারে তৃণমূল।