Abhishek Banerjee

কৃষিভবনকাণ্ডে সেই তিন ঘণ্টার ‘ফুটেজ’ প্রকাশের দাবি অভিষেকের, ঘোষিত রাজভবন অভিযানের ছক

অভিষেক জানান, মঙ্গলবার কৃষিভবনে যদি তাঁদের ঝামেলা করার মনোভাব থাকত, তবে পাঁচ হাজার লোক তাঁদের পক্ষেই ছিলেন। তৃণমূল ঝামেলা করেছে কি না, সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই তা স্পষ্ট হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ২০:১৫
Share:

কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর দেখা পাননি। কলকাতায় ফিরে তাই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সেই রাজভবন অভিযান কর্মসূচি বিশদে ব্যাখ্যা করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন কত জনকে নিয়ে রাজভবনে ঢুকে কী কী করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। সেই সঙ্গে দিল্লির কৃষিভবনে কী কী হয়েছে তার সিসিটিভি ফুটেজও দেখানোর দাবি করেছেন অভিষেক।

Advertisement

অভিষেক জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় তাঁরা কৃষিভবনে পৌঁছন। এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্রেরা খোঁজ নিতে যান। এই সময়ে তৃণমূলের পেজ থেকে ফেসবুক লাইভ করা হয়। আড়াই ঘণ্টা বসে থাকার পর আবার খোঁজ নিতে সাংসদদের পাঠান অভিষেক। কিন্তু সেই সময়েই নিরাপত্তারক্ষীরা এসে জানান, প্রতিমন্ত্রী এই মাত্র পিছনের দরজা দিয়ে চলে গিয়েছেন!

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিল্লির কৃষিভবনে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। মন্ত্রী সময়ও দিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ, যথাসময়ে কৃষিভবনে গিয়েও তারা মন্ত্রীর দেখা পাননি। তাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে মন্ত্রী শেষে পিছনের দরজা দিয়ে ‘পালিয়ে’ গিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও মঙ্গলবার একই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁকে অবশ্য সময় দিয়েছেন মন্ত্রী। নিরঞ্জন জ্যোতি পরে বলেন, ‘‘আমি জানতাম তৃণমূলের সাংসদ ও মন্ত্রীরা ৬টায় দেখা করতে আসবেন। সে জন্যই সময় নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরে তৃণমূলের কর্মী এবং সাধারণ জনতার দাবিতে তাঁদের নিয়ে ওঁরা দেখা করতে চাইছিলেন। যা অফিসের নিয়ম বিরুদ্ধ। ওঁরা রাজনীতি করতেই এসেছিলেন। আলোচনা উদ্দেশ্য ছিল না।’’

Advertisement

অভিষেকের কথায়, ‘‘আসলে পিছনের দরজা দিয়ে মন্ত্রী পালিয়ে গিয়েছেন। আমরা ওখানে ঝামেলা করেছি কি না, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমাদের সকলের পরিচয়পত্র দেখেই তো ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। ঝামেলা যদি করতে চাইতাম, পাঁচ হাজার লোক আমাদের ছিল। আমরাই সবাইকে বলেছিলেন, শুধু প্রতিনিধিরাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন, আর কেউ যাবেন না।’’

এর পরেই রাজভবন অভিযানের পরিকল্পনা বিস্তারিত জানান অভিষেক। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার রাজভবনে প্রবেশ করবে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে তাঁরা দেখা করবেন এবং নিজেদের দাবি জানাবেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে নাগাদ রবীন্দ্র সদনে জমায়েত করবেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে রাজভবন অভিযান শুরু হবে। রাজ্যপালকে এ বিষয়ে বুধবার রাতেই চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক।

দিল্লিতে যে দাবিদাওয়া নিয়ে গিয়েছিলেন, সেগুলি রাজ্যপাল বোসকেও জানাবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ১০০ দিনের কাজ করেও যাঁরা টাকা পাননি, সেই বঞ্চিতদের চিঠি তুলে দেওয়া হবে রাজ্যপালের হাতে। সেই সঙ্গে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কাছে একটি প্রশ্নও রাখবেন বলে জানান অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই ২০ লক্ষ মানুষ কি কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজ করেননি? যদি করে থাকেন, কোন আইনে সেই পরিশ্রমের প্রাপ্য টাকা সরকার আটকে রেখেছে?’’

অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্যপালের পদে বসে উনি তো অনেক কথা বলেন। বাংলায় গণতন্ত্র নাকি ভূলুণ্ঠিত। উনি কালকের ঘটনা দেখে নিশ্চয়ই এটা উপলব্ধি করেছেন যে, যেই বাংলার প্রতিনিধিত্ব উনি করছেন, দিল্লিতে সেখানকার মানুষের উপর অত্যাচার করেছে অমিত শাহের পুলিশ।’’

রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশাবাদী অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘দিল্লিতে আমরা যে চিঠিগুলি নিয়ে দরবার করেছিলাম, সেগুলি ফেরত এনেছি। রাজ্যপালকে সেগুলি দেব। ওঁকে অনুরোধ করব, কেন্দ্রের কাছে বাংলার মানুষের এই বঞ্চনার কারণ জানতে চান। আশা করি উনি দেখা করবেন। সদর্থক ভূমিকা পালন করবেন। যদি দেখা না হয়, সেখান থেকেই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement