তথাগত রায়, সায়নী ঘোষ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে ফের সরব বিজেপি নেতা তথাগত রায়। সোমবার টুইট করে সায়নির যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি হওয়া নিয়ে মন্তব্য করতে তিনি টেনে আনেন ‘শিবলিঙ্গ ও কন্ডোম’ প্রসঙ্গ। প্রশ্ন তোলেন সায়নিকে গুরুত্ব দিয়ে কি তৃণমূল হিন্দুদের অপমান করতে চাইছে। এর জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলায় হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগি চলে না। সেটা ভোটের রায়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেউ যদি হারের পরেও না শেখে তবে কিছু করার নেই।’’
প্রসঙ্গত ২০১৫ সালে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি গ্রাফিক শেয়ার হয়েছিল। একটি শিবলিঙ্গের ছবি। তাতে কন্ডোম পরাচ্ছেন এক মহিলা। গ্রাফিক থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহিলাকে এডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাফিকের ভিতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। পোস্টের ক্যাপশনে ছিল, ‘এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না ঈশ্বর’। সেই পোস্টের ৬ বছর পরে গত ১৬ জানুয়ারি মাসে সায়নির বিরুদ্ধে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন উত্তর-পূর্বের ৩ রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত। অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি শিবের ভক্ত। ১৯৯৬ সালে শিবের পুজো দেওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা করেছিলাম। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের এই ছবিটি দেখে আমার ধর্মীয় ভাবাবেগ আহত হয়েছে। আমার আর্জি, আপনারা এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে।’ সেই সময় সায়নী জানিয়েছিলেন, ২০১৫ সালে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। তিনি দেখার পরে ওই পোস্টটি ডিলিট করে দেন। যদিও তাতে বিতর্ক থামেনি। বিধানসভা নির্বাচন পর্বে বারবার এই প্রসঙ্গে বিজেপি-র পক্ষে আক্রমণ করা হয় আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সায়নীর বিরুদ্ধে।
গত শনিবার নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন সায়নী। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সোমবার তথাগত টুইটারে লেখেন, ‘শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরিয়ে (কবে পরিয়েছিলেন সেটা অবান্তর) আমার মতন তাবৎ হিন্দুকে, বিশেষত শিবভক্তদের, চরম অপমান করেছেন সায়নী ঘোষ। তাকে উত্তরোত্তর সম্মান দিয়ে হিন্দুদের কি বলতে চাইছেন মমতা? আমি ভোটে জিতেছি, এবার যা খুশি করব। তোরা অসহায় হিন্দুরা কি করতে পারিস?’ এই টুইটের জবাবেই তথাগত আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, ‘‘গোটা ভোট পর্বেই তো বিজেপি এই সব বলেছে। কিন্তু মানুষের রায় বলে দিয়েছে বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলে না। কে কী টুইট করল তাতে কিছু এসে যায় না।’’