অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পুজো পক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলায়। সেই উৎসবের আবহেই বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা মনে করিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয়ার দিন দুর্গা পুজোর মণ্ডপ উদ্বোধনে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায়, ঠিক তখনই নিজের লোকসভা কেন্দ্রে বস্ত্র বিতরণ করছিলেন অভিষেক। সেই অনুষ্ঠানেই টেনে আনেন বাংলার মানুষের একশো দিনের কাজের টাকার প্রসঙ্গ। অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলার একশো দিনের টাকা ফিরিয়ে আনবই। আমাকে ছ’মাস সময় দিন।’’
উল্লেখ্য, ছ’মাস পরই দেশে লোকসভা ভোট। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অগ্নিপরীক্ষা! সেই জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূল। সোমবার সেই তৃণমূলেরই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘দিল্লির বহিরাগতদের কাছে আমরা মাথা নোয়াব না। ওরা ভোটের সময় আসে বিপদে আপনাদের পাশে থাকে না। ওই বহিরাগতদের আমরা ২০২১ সালে বাংলা থেকে বের করেছিলাম এ বার কেন্দ্র থেকে সরাব।’’
পুজোর আগে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের মানুষকে বস্ত্র বিতরণ করতে এসেছিলেন অভিষেক। একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে সভা করছিলেন। গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দিচ্ছিলেন নতুন কাপড়। সরিষায় সেই অনুষ্ঠানে আচমকাই অভিষেক ঘোষণা করেন, পরের বছর থেকে আর এ ভাবে বস্ত্র বিতরণের অনুষ্ঠান করবেন না। বদলে তাঁর কর্মী সমর্থকেরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসবে নতুন কাপড়। কেন এই সিদ্ধান্ত, তার ব্যাখ্যাও দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখানে এসে দেখছি কাপড় নিতে মাঠে ভিড় করেছেন ১৫ হাজার মানুষ। আর আমি পাঠিয়েছি ৩-৪ হাজার কাপড়। সবাই তো কাজ করতে করতেই শেখে। আপনাদের বলে দিয়ে যাচ্ছি, নতুন কাপড় নিতে আপনাদের আর মাঠে আসতে হবে না। কথা দিলাম। আমি কথা দিলে কথা রাখি।’’
সম্প্রতি আরও একটি কথা দিয়েছেন অভিষেক। সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে। কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে তৃণমূল তাদের আন্দোলন কিছুদিনের জন্য মুলতবি রাখছে বলে সম্প্রতি নিজের ধর্না মঞ্চ থেকে জানিয়েছিলেন অভিষেকই। সোমবার তিনি বললেন, ‘‘২১ লক্ষ ৭৫ হাজার পরিবার ১০০ দিনের কাজ করে বঞ্চিত। আপনারা আমাকে ছ’মাস সময় দিন। আপনাদের টাকা আমরা আনব। যদি আনতে না পারি, আপনাদের পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা মা-মাটি মানুষের সরকার করবে। কাউকে করতে হবে না।’’
বস্ত্র বিতরণের মঞ্চ থেকে সাংসদ অভিষেক তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে গত পাঁচ বছরে কাজের হিসাবও দিয়েছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় একদিনে সর্বাধিক টিকাকরণ প্রসঙ্গ — সবই মনে করিয়ে দেন। সেই সঙ্গে বলেন, ভারতের সবচেয়ে বড় জলের প্রকল্পের কাজ চলছে তাঁর কেন্দ্রে। ফলতা মথুরাপুর জল প্রকল্পে ১৪০০ কোটি টাকা বাজেট। কয়েক মাসের মধ্যেই তার কাজও শেষ হবে বলে জানান তৃণমূল সাংসদ। সেই সঙ্গে নিজের কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে একটি দাবিও রাখেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘গতবার সব থেকে বেশি ভোট পেয়ে জিতেছিলাম। সাত লক্ষেরও বেশি ভোট। ব্যবধানের নিরিখে ছিলাম দ্বিতীয়। প্রথম হয়েছিল বসিরহাট। তিন লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলাম। ২০২৪ সালে কিন্তু সেই ব্যবধান বাড়িয়ে চার লক্ষ করতে হবে।’’