কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি : টুইটার থেকে।
চোখের জটিল অস্ত্রোপচার করিয়ে দেশে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালেই কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে তাঁর বিমান। সকাল ৮টা নাগাদ বিমানবন্দর থেকে বার হন অভিষেক। তাঁর চোখে ছিল ঘষা কাচের চশমা।
চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় যাওয়ার ২৫ দিন পর দেশে ফিরলেন তিনি। গত ১২ অক্টোবর আমেরিকার জন হপকিন্স হাসপাতালে চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। টুইটারে অভিষেকের অস্ত্রোপচারের পরের ছবিও দিয়েছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বাঁ চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কুণাল জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে, অভিষেকও ভাল আছেন। তবে তাঁকে পর্যবেক্ষণ রাখা হয়েছে। সোমবার চোখে অস্ত্রোপচারের ১২ দিন পর কলকাতায় ফিরলেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর চশমার বাঁ দিকের কাচটি ছিল ঘষা। ডান দিকেরটি অবশ্য সাধারণ।
কালীপুজোর আগেই যে অভিষেক কলকাতায় ফিরতে চান তা আগেই জানা গিয়েছিল ঘনিষ্ঠ সূত্রে। সেই অনুমান সত্যি করে সোমবার কালীপুজোর সকালে শহরে ফিরলেন তিনি। তবে রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজোয় এ বারও তাঁকে পুজোয় বসতে দেখা যাবে কি না সে দিকে নজর থাকবে।
প্রতি বছরই পুজোর যজ্ঞে বসেন অভিষেক। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, এখন কিছু দিন চোখের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে অভিষেককে। বাঁ চোখে ধুলো এবং তাপ যাতে না লাগে, সে দিকেও রাখতে হবে বিশেষ নজর। তাই হয়তো তাঁকে এ বার কালীপুজোর হোম-যজ্ঞের কাছাকাছি দেখা যাবে না বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের অক্টোবরে মুর্শিদাবাদে এক দলীয় কর্মিসভা থেকে ফেরার সময় পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন অভিষেক। সিঙ্গুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি দুধের গাড়িতে আচমকা ধাক্কা মেরে উল্টে যায় তৃণমূল সাংসদের গাড়ি। দুমড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে অভিষেককে উদ্ধার করা হয়েছিল অচৈতন্য অবস্থায়। সেই দুর্ঘটনাতে সাংসদের বাঁ চোখের নীচে ‘অরবিটাল বোন’ (চোখকে ধরে রাখার হাড়) ভেঙে যায়। এর পর থেকে তিনি দীর্ঘ দিন ওই চোখ নিয়ে সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসার কারণে তাঁকে একাধিক বার দুবাইও যেতে হয়েছিল।
অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, এর আগে কয়েক বার অভিষেকের ওই চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসা হয়েছে সিঙ্গাপুর এবং হায়দরাবাদেও। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। এর পর ২০২০ সালের মার্চে চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য অভিষেকের আমেরিকা যাওয়ার কথা থাকলেও কোভিড আবহে তা দু’বছর পিছিয়ে যায়। কিন্তু এই অস্ত্রোপচার আর বেশি দিন ফেলে রাখা সমীচীন হবে না বলেই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন অভিষেককে। তাই অক্টোবরেই আমেরিকায় যান তিনি। গত ১২ অক্টোবর পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিষেকের বাঁ চোখে অস্ত্রোপচার করেন জন্স হপকিন্স হাসপাতালের দুই অভিজ্ঞ শল্য চিকিৎসক।