Abhishek Banerjee

লোকসভা ভোটে তৃণমূল ৪০টি আসনের জন্য ঝাঁপাবে, রাজ্যের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন: অভিষেক

রাজ্যে গত মাসে সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলা থেকে বিজেপিকে ৩৫টি আসনে জেতানোর ডাক দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ০৭:১০
Share:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

সংসদে তৃণমূল কংগ্রেস যত বেশি আসন পাবে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাজ্যের দাবি আদায়ের লড়াই তত জোরদার হবে। এই যুক্তি সামনে রেখেই আগামী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে জেতানোর আহ্বান জানালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার সভায় রবিবার অভিষেক বলেছেন, ‘‘আমাদের সাংসদ-সংখ্যা বেশি থাকলে দিল্লি টাকা আটকে রাখতে পারতো না।’’ তাঁর যুক্তি, গত লোকসভায় তৃণমূল ২২টির বদলে ৩৪-৩৫টি আসন পেলে মোদী সরকার রাজ্যের পাওনা টাকা আটকাতে পারতো না।

Advertisement

জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে অভিষেক এখন মুর্শিদাবাদ জেলায়। সেখানে ভগবানগোলায় শনিবার রাতেই দলের সভায় অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলের একটা আসন কম হলে কিছু যায় আসে না। আপনি বঞ্চিত হবেন। আর একটা আসন বেশি পেলে আপনার অধিকারের টাকা আপনি পাবেন। আগামী দিনে ৪০-এর লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে আমরা ঝাঁপাব।’’ রাজ্যের স্বার্থের কথা বলেই দলের সামনে ৪০টি লোকসভা আসনের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন তিনি।

রাজ্যে গত মাসে সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলা থেকে বিজেপিকে ৩৫টি আসনে জেতানোর ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, লোকসভায় বিজেপি ৩৫টি আসন পেলে ২০২৬ সালের আগেই রাজ্যে তৃণমূলের সরকার পড়ে যাবে। এ বার অভিষেক তৃণমূলের জন্য ৪০টি লোকসভা আসনের লক্ষ্য ধার্য করায় তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

Advertisement

অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘আমাদের যত আসন থাকবে, তত দাবি আদায়ে সুবিধা হবে। আমাদের যে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা মোদী সরকার আটকে রেখেছে, মানুষ যদি আওয়াজ তোলে, এ টাকা কোনও সরকার আটকে রাখতে পারে না। তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে প্রার্থীদের জয়ী করার চেষ্টা করুন।’’

মুশির্দাবাদ জেলায় লোকসভায় খাতা খুলে গত বারই দু’টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। বহরমপুরে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী। ওই জেলার প্রসঙ্গ তুলেই অভিষেকের দাবি, ‘‘মুর্শিদাবাদ তিনে তিন! রাজ্যে ৪০টা আসন লক্ষ্য।’’ হরিহরপাড়ার সভায় রবিবারও অভিষেক বলেছেন, ‘‘আমাদের সাংসদ-সংখ্যা বেশি থাকলে দিল্লি টাকা আটকে রাখতে পারত না।’’

অভিষেকের আসনের দাবি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে ওঁরা বলেছিলেন, ৪২-এ ৪২। পেয়েছিলেন ২২। আর আমরা বলেছিলাম ২২, পেয়েছিলাম ১৮। বোঝাই যাচ্ছে, কার ফলাফল কেমন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এখন উনি অমিত শাহকে নকল করছেন। মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন, লোকের বাড়ি খাচ্ছেন, মেলামেশা করছেন, আর কত আসন জিতবেন, বলে দিচ্ছেন। অত দিন ওদের দলই থাকবে না! তার পরে তো জেতা-হারা।’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের বক্তব্য, ‘‘অমিত শাহ বলেছিলেন ৩৫ পাবেন। অভিষেক বলছেন ৪০টা জিতবেন। তা হলে ৭৫টা আসন এখানেই হয়ে গেল! বাকি দলগুলো আর করবে কী তা হলে? শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে ৪০-এর মধ্যে ৪ বা ০, কোনও একটা সংখ্যা খসে যাবে!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘দু’টো ছেড়ে রাখছেন কেন? পুরো ৪২টাই তো বলতে পারেন! এর আগে বিধানসভায় ২৪০টা জিতবেন বলেছিলেন। বিজেপি আর তৃণমূল নিজেদের মধ্যে লোকসভা এবং বিধানসভা আসন বাঁটোয়ারা করে নিতে ব্যস্ত! পঞ্চায়েত ভোটটার কী হবে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement