ইটাহারের চৌরাস্তা মোড়ে গাড়ির উপরে দাঁড়িয়ে প্রায় ১৫ মিনিট বক্তব্য রাখলেন অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
সরাসরি কালিয়াগঞ্জ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ না তুলে ইঙ্গিতে বিজেপিকে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে সোমবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার জনসভায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেন, “যারা বন্ধ, মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করে, তারা দেউলিয়া। তাদের কোনও কর্মসূচি নেই। তাদের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পরিষেবা দেওয়ার কিছু নেই। যখনই কেউ মারা যায়, দাঙ্গার পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তখন বিজেপি আসরে নামে। মানুষ এদের উচিত শিক্ষা দেবে!” পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও।
কালিয়াগঞ্জের নাবালিকার মৃত্যু এবং থানায় ভাঙচুরে অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর পরে গত শুক্রবার উত্তরবঙ্গে বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি। ওই দিন রাজবংশী বা জনজাতিদের কোনও সংগঠনকে প্রত্যক্ষ ভাবে ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় দেখা না গেলেও বন্ধ পালনের জন্য গা-জোয়ারি করার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। সে দিনই বিজেপিকে ‘ভারত জ্বালানো পার্টি’ বলে আক্রমণে গিয়েছিলেন অভিষেক। এ বার কালিয়াগঞ্জ যে জেলায়, সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বন্ধ এবং মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি।
রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর প্রশ্ন, অভিষেকের যদি সহানুভূতি থাকে, তা হলে উত্তর দিনাজপুরে এসেও মৃত নাবালিকা ও নিহত যুবকের বাড়িতে কেন গেলেন না তিনি! দেবশ্রীর মন্তব্য, “আসলে উনি সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন। খোকাবাবু পিসির দয়ায় উড়ে এসে সাংসদ হয়েছেন। উনি রাজনীতির কিছু বোঝেন না।’’ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মৃতদেহ আর বন্ধের রাজনীতি বাংলায় কে প্রথম শুরু করেছেন? জঙ্গলমহল থেকে মৃতদেহ কলকাতায় নিয়ে এসে মিছিল করা, সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের দেহ নিয়ে রাজনীতি ওঁর পিসি করে দেখিয়েছেন। রাজ্যে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে ৭৬ বার বন্ধ ডেকে বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন ওঁর পিসি। উনি তখন নাবালক ছিলেন, তাই হয়তো মনে নেই। এখন ওঁর মনে হচ্ছে, এটা ভুল!’’
এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘দলনেত্রী কখনও অসঙ্গত কারণে বা ইচ্ছাকৃত অশান্তি বাধাতে বন্ধ ডাকেননি, যেমন বিজেপি করে!’’ আর কালিয়াগঞ্জে মৃত নাবালিকা বা নিহত যুবকের বাড়ি অভিষেকের না যাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সফরসূচি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। যথাযথ সময়ে সভা করা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি অন্য কোথাও যেতে পারেননি।’’