AITC

Municipal Poll 2022: পুরভোটে কোনও দায়িত্বে নেই অভিষেক! ‘পর্যবেক্ষক’ কি ফিরে আসছে কো-অর্ডিনেটর নামে

সোমবার তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন পুরভোটে জেলাভিত্তিক নেতাদের দায়িত্বের কথা। পার্থের ঘোষিত তালিকায় নাম নেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:৫৫
Share:

পুরনো সতীর্থদের ওপরেই আস্থা রাখলেন দলের সর্বময় নেত্রী মমতা। ফাইল চিত্র

পশ্চিমবঙ্গের পুরভোটের কোনও দায়িত্বেই রইলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নাকতলার বাসভবনে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন পুরভোটে জেলাভিত্তিক নেতাদের দায়িত্বের কথা। পার্থেরসেই ঘোষিত তালিকায় নাম নেই ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের।

Advertisement

পুরভোটের দায়িত্ব পালনে বেছে নেওয়া হয়েছে দলের পুরনো নেতাদের। তাঁদের পদের নাম দেওয়া হয়েছে‘কো-অর্ডিনেটর’। মুখে ‘কো-অর্ডিনেটর’ বলা হলেও তৃণমূলের এই ঘোষণা মনে করাচ্ছে অতীতের ‘পর্যবেক্ষক’ সংস্কৃতিকেই।তৃণমূলের একাংশের দাবি, তৃণমূলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ‘আলগা’ হতে আবার পুরনো পদ্ধতিতে ফিরতে শুরু করেছে তৃণমূল। পুরনো অভ্যাস ঝালিয়ে নিতে রাজ্যের ১০৮টি পুর নির্বাচনকেই বেছে নিয়েছে দল। সেই সঙ্গে গোটা প্রক্রিয়ায় রাখা হল না অভিষেককে।

যদিও দলের অন্য একাংশের বক্তব্য, অভিষেক দলের ‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক’। সেই সূত্রে তিনি জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে বেশি ব্যস্ত। যেমন এখন অভিষেক ব্যস্ত গোয়ার বিধানসভা ভোট নিয়ে। দলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, ‘‘অভিষেক জাতীয় স্তরের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। রাজ্যের পুরসভা ভোটেরও দায়িত্ব দিয়ে তাঁর উপর বোঝা বাড়ানো অর্থহীন।’’

Advertisement

পার্থের ঘোষণা অনুযায়ী পুরভোটে হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়কে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দায়িত্ব পেয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পার্থ ভৌমিক।দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই দায়িত্বে রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিষ চক্রবর্তী ও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কোচবিহার ও পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুরের দায়িত্বে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পুরুলিয়া ও বাকুঁড়া জেলার দায়িত্বে পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বে জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি। ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে স্বয়ং মহাসচিব পার্থ।

অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ারের দায়িত্বে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মলয়। জলপাইগুড়ির দায়িত্বে প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। দার্জিলিংয়ের দায়িত্বে গৌতম দেব। দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্ব সামলাবেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। নদিয়া জেলার দায়িত্বেও রয়েছেন পার্থ। তাঁর সঙ্গে থাকছেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও রাজ্যসভার উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়। পার্থ জানিয়েছেন, পুরসভা নির্বাচনে জেলা সভাপতি ও বাকিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কো-অর্ডিনেটররা কাজ করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পরে দায়িত্বে আসে প্রশান্তর আইপ্যাক। তার আগে তৃণমূলে ছিল জেলা পর্যবেক্ষক পদ।দলের বড় নেতাদের বিভিন্ন জেলার পর্যবেক্ষক করে দায়িত্বে রাখতেন মমতা। কিন্তু আইপ্যাক দায়িত্ব নেওয়ার পর তৃণমূলে সাংগঠনিক ভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল পর্যবেক্ষক পদ।

ঘটনাচক্রে, অভিষেক মনে করেন, ‘পর্যবেক্ষক’ পদটি ব্যর্থ। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন দেখিয়েছিল পর্যবেক্ষক পদের ব্যর্থতা।’’ কিন্তু মনে করা হচ্ছে, সোমবার ঘুরপথে হলেও তৃণমূল ফিরে গেল পুরনো রীতিতেই। দলের পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিতে আইপ্যাকের সুপারিশের পাশাপাশি অভিষেকের মস্তিষ্কও কাজ করেছিল বলেই সেই সময় তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হয়েছিল। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউই সে কথা বলেননি। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, সেই অভিষেককেই পুরভোটের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুরনো সতীর্থদের ওপরেই আস্থা রাখলেন দলের সর্বময় নেত্রী মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement