পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের প্রার্থী বাছাই ভোট বাতিল করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
‘অনিয়মে’র অভিযোগ ওঠায় পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের প্রার্থী বাছাই ভোট বাতিল করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ভোট পুনরায় করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর জন্য মন্ত্রী তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকে মাথায় রেখে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে শনিবারের অভি-যাত্রায় ‘প্রত্যাশিত’ জমায়েত না থাকা নিয়েও দলের বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রবিবার শালবনিতে দলের পর্যালোচনা বৈঠক ছিল। সেখানেই কেশিয়াড়ির ভোট বাতিলের নির্দেশ দেন অভিষেক। এর আগে পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের ওই ভোটে বেশ কয়েকবার ব্যালট পেপার কাড়াকাড়ি, ছিনতাইও হয়েছে। ভেস্তে গিয়েছে পুরো প্রক্রিয়া। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সে ভাবে কোনও গোলমাল হয়নি। তা সত্ত্বেও কেশিয়াড়ির ভোটপর্ব বাতিল করে অভিষেক স্বচ্ছতার বার্তা দিতে চাইলেন বলে মত রাজনীতির কারবারিদের।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় শালবনিতে ভোটগ্রহণে কেশিয়াড়ি ব্লকে বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি হিসেবে যাঁরা ভোটাধিকার পেয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে দলের ব্লক সভাপতির অনুমোদিত নন, বিধায়কের অনুমোদিত। সেই অভিযোগই যায় অভিষেকের কাছে। তারপরই ভোট বাতিলের সিদ্ধান্ত। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক আশিস চক্রবর্তী মানছেন, ‘‘কেশিয়াড়ির ভোটটা বাতিল হয়েছে।’’ কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু বলেন, ‘‘ভোট বাতিল অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ ভোটার তালিকায় তো ব্লক সভাপতির সই ছিল না? তাঁর জবাব, ‘‘ব্লক সভাপতিকে সই করার জন্য ডাকা হয়েছিল। তিনি আসেননি। জেলা সভাপতি তালিকা অনুমোদন করেছিলেন।’’ ব্লক সভাপতি শ্রীনাথ বলছেন, ‘‘দিদি যখন নির্দেশ দিয়েছেন তখন নিজেদের মধ্যে বসে ঠিক করে নেওয়া হবে। অভিষেক যা বলেছেন আমাদের মানতে হবে।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘গণভোট কী কারণে বাতিল হয়েছে জানি না। দল যখন চাইবে তখন গণভোট হবে।’’
শনিবার জনসংযোগ যাত্রা নিয়ে খড়্গপুরের চৌরঙ্গী, মেদিনীপুরের ধর্মা, শালবনির গোদাপিয়াশাল হয়ে শালবনির অধিবেশনস্থলে পৌঁছেছিলেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে খবর, চৌরঙ্গীতে ৭০- ৮০ হাজার লোকের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। বাস্তবে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম লোক হয়েছিল। শালবনির কাছারি রোডের কাছে ২০-২৫ হাজার লোকের জমায়েত থাকার কথা ছিল। সেটাও হয়নি। এরপরে রবিবার শালবনির পর্যালোচনা বৈঠকে ব্লক ধরে ধরে সাংগঠনিক পর্যালোচনা করেছেন অভিষেক। একাধিক বিধায়ক, ব্লক সভাপতিকে সতর্কও করেছেন।
রবিবার শালবনিতে পর্যালোচনা বৈঠক সেরে অভিষেক গিয়েছিলেন চন্দ্রকোনা রোডে। সেখানে রোড শো সেরে পৌঁছন ক্ষুদিরামের জন্মস্থান মোহবনিতে। মূর্তিতে মাল্যদান করে ক্ষুদিরামের উত্তরসূরিদের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। চন্দ্রকোনা রোডে সারেন রোড শো। সেখান থেকে বীরসিংহে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান ছুঁয়ে পৌঁছন ঘাটাল।