প্রত্যাবর্তন: ডায়মন্ড হারবারের সভায় অভিষেক। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
পথ দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে নিজের কেন্দ্রে প্রথম সভা থেকে বিজেপি এবং তাদের পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারকেই নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডায়মন্ড হারবারের সভায় রবিবার অভিষেকের অভিযোগ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কেন্দ্রীয় সরকার সহ্য করতে পারছে না। কিছু হলেই ইডি ও সিবিআইয়ের ভয় দেখাচ্ছে!’’ তাঁর দাবি, তৃণমূল সমাজবাদী বা বহুজন সমাজ পার্টি নয়। তৃণমূল নেত্রীর পিছনে বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় কোনও গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগিয়েই তৃণমূলকে কোণঠাসা করা যাবে না। যুব তৃণমূল সভাপতির কথায়, ‘‘সিবিআই, ইডি-কে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চমকানো যাবে না! তৃণমূল ঘুমন্ত বাঘ। যে-ই তার পিছনে চিমটি কাটুক, সে পাল্টা থাবা মারবে!’’
ঘটনাচক্রে, এ দিনই শিলিগুড়িতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সিবিআই নিয়ে এমন দাবি করেছেন, যা তৃণমূলকে ফের সরব হতেই সাহায্য করছে! দিলীপবাবু দাবি করেছেন, ‘‘রাজ্যে তো মামলার সংখ্যা বাড়ছে। তাই সিবিআইও ওদের বাহিনী-পরিকাঠামো বাড়াবে।’’ কিন্তু সিবিআই পরিকাঠামো বাড়াবে কি না, তা দিলীপবাবু বলছেন কী করে? বিজেপির রাজ্য সভাপতির ব্যাখ্যা, সারদা মামলায় তদন্তের গতি বাড়ানোর দাবিতে সম্প্রতি তাঁরা সিবিআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখনই তাঁরা জেনেছিলেন, রাজ্য সরকার সিবিআইকে বাহিনী-পরিকাঠামো দিয়ে সাহায্য করছে না। দিলীপবাবুর দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নারদা-কাণ্ডে প্রাথমিক তদন্ত সেরে এফআইআর করবে সিবিআই এবং তার পরে তদন্তের পরিধিও বাড়বে।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হবে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি কী করে তা আগেভাগে বলে দিলেন? দিলীপবাবু বলেছিলেন, হাইকোর্টে মামলার গতিপ্রকৃতি দেখলে যে কেউই এটা বলতে পারতো! তাঁর এ দিনের মন্তব্যের পরে তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গৌতম দেবেরা বলছেন, ‘‘বিজেপি প্রতি পদে বুঝিয়ে দিচ্ছে, সিবিআইকে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে!’’
যুব তৃণমূল সভাপতি এ দিনের সভা থেকে দলের কর্মীদের পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করারও বার্তা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এ রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শক্তির উদয় হয়েছে। একটি ‘ছদ্মবেশী’ সিপিএম এবং অন্যটি ‘পদ্মবেশী’ বিজেপি। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। বাড়ির সামনে পোস্টার লিখুন। বিজেপি-র তো দু’টো নাম। একটা বাংলা জ্বালাও পার্টি! আর একটা বাচ্চা ঝাড়া পার্টি!’’ তাঁর আরও মন্তব্য ‘‘শিশু পাচার নিয়ে সিআইডি তদন্ত করছে। কোন দ্রৌপদী এই কাণ্ডে জড়িত এবং কত টাকা এ দিক-ও দিক করছে, সব তদন্ত করে দেখা হচ্ছে! কেউ ছাড় পাবে না!’’ পঞ্চায়েতে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির জামানত জব্দ করারও ডাক দিয়েছেন তিনি।