(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তীব্র আক্রমণে বিদ্ধ করলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনের মহিলা কর্মীর ‘শ্লীলতাহানি’কাণ্ডে বৃহস্পতিবার রাজভবনে সিসিটিভি ফুটেজ দেখানোর আয়োজন করেছিলেন বোস। শুক্রবার তাকে নাটক বলে কটাক্ষ করেন অভিষেক। রাজ্যপালের উদ্দেশে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, ‘‘বাইরের ফুটেজ দেখিয়ে কী হবে? ক্ষমতা থাকলে রাজ্যপাল তাঁর করিডর, চেম্বারের ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন।’’ অভিষেক মনে করেন, সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া উচিত।
শুক্রবার ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক আলিপুর ট্রেজ়ারি বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন জমা দেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূলের সেনাপতি। রাজ্যপাল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, আমি যদি তা খারিজ করতে ভিডিয়ো দেখাই, তা হলে তো সমস্ত ফুটেজ দেখাব। চেম্বার, সিঁড়ি, করিডর— সব জায়গার ভিডিয়ো দেখানোর কথা। কিন্তু রাজ্যপাল শুধু বাইরের ভিডিয়ো প্রাকাশ্যে এনেছেন। এ তো পুরো নাটক।’’
এর পরেই আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘এই রাজ্যপাল কলুষিত করেছেন রাজ্যপাল পদটিকেই। মেয়ের বয়সি মেয়েকে চাকরি দেওয়ার নামে শ্লীলতাহানি করেছেন। আমরা অনেক রাজ্যপাল দেখেছি। জগদীপ ধনখড়কেও দেখেছি। কিন্তু এই রকম নীচে নামতে কাউকে কাউকে দেখিনি।’’ রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর সাংবিধানিক রক্ষাকবচও রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের উচিত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া। রাজ্যপাল বলে তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারেন না। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’’
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মচারী। তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেন ওই তরুণী। কিন্তু রাজ্যপালের সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় পুলিশ তদন্ত শুরু করতে পারেনি। তবে অনুসন্ধান শুরু করেছে লালবাজার। পূর্ত দফতরের মাধ্যমে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ শুক্রবারই হাতে পেয়েছে লালবাজার। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাজভবন যে ফুটেজ দেখিয়েছে, তাতে অভিযোগকারিণীর স্পষ্ট মুখের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল। যা নিয়ে ওই তরুণী আপত্তি জানিয়েছিলেন। শুক্রবার অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্যপাল ওই বোনটিকে আরও বেশি করে অপমান করেছেন।’’
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনের ঘটনা নিয়ে বোসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদের একটি নির্বাচনী জনসভা থেকে তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘ওই মেয়েটির কান্না দেখে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে!’’ শুক্রবার রাজ্যপালকে আক্রমণ শানালেন অভিষেকও।