তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের সমালোচনায় ঝাঁঝ আরও বাড়াল তৃণমূল। বুধবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কংগ্রেস কিছু না করলে আমরা তো চুপ করে বসে দেখতে পারি না। তৃণমূল রাস্তায় আছে।’’
কিছুদিন ধরেই প্রকাশ্যে কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপত্রে কংগ্রেসকে ‘পচা ডোবা’র সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এমনকী বিরোধী- বিকল্প হিসেবে রাহুল গাঁধী যে বিকল্প নন, মমতাই পারবেন— এমন কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেতারা।
ভবানীপুর ভোটের আগে তৃণমূলের এই অবস্থান নিয়ে কংগ্রেসও যথেষ্ট আক্রমণাত্মক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন নরেন্দ্র মোদীকে নাম করে আক্রমণ করছেন না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একই ভাবে মমতার ভূমিকা বিরোধী জোটের পরিপন্থী বলেও অভিযোগ করছে কংগ্রেস এবং সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।
এই অবস্থায় এ দিন কংগ্রেস ছেড়ে আসা গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফলেরিও সহ ৬ জন কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তার আগে তাঁরা নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে অভিষেকও ছিলেন। ফালেইরোকে দলে স্বাগত জানিয়ে টুইট বার্তায় মমতা বলেন, ‘‘গোয়ার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে সেখানে নতুন সূর্যোদয় ঘটাব।’’ ফালেরিওর দাবি, ‘‘ভেঙে যাওয়া কংগ্রেস পরিবারকে ( কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যারা আলাদা দল করেছেন) একত্রিত করাই আমাদের লক্ষ্য। মমতাদি যে ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে অনমনীয় লড়াই করেছেন তার ফলেই তাঁর দলে যোগ দিয়েছি।’’ অভিষেক জানান, গোয়ার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল একক ভাবে লড়বে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ময়দানে ট্রয়ের ঘোড়া হয়ে তৃণমূল বিভিন্ন যা রাজ্যে যা করছে তাতে সব থেকে খুশি হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। রাজ্যে ‘আশা কর্মী’দের মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিকে কাজ করতে হচ্ছে। চার্টার্ড প্লেন নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তৃণমূল বিস্তার অভিয়ানে নেমেছে। যার একমাত্র লক্ষ্য কংগ্রেসকে দূর্বল কর। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে সেখানেই দলে নেওয়া যেত। কলকাতায় এনে যোগদান কি শুধু কংগ্রেসকে গাল দেওয়ার জন্য?’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ভাইপো আসলে পিসিকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নের দিকে ঠেলছেন, যাতে নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। আমরা তৃণমূলের সম্প্রসারণ নিয়ে চিন্তিত নই। ২০২৪-এও মানুষ নরেন্দ্র মোদীকেই ভোট দেবেন।’’
তৃণমূলের এই ধরনের অবস্থান বৃহত্তর বিরোধী জোটের ক্ষতি করবে কি না, সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব অভিষেক দেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লড়াই কংগ্রেসের সঙ্গে নয়। তবে বারবার আমরা যে কথা বলেছি তা হল কংগ্রেসকে পথে নামতে হবে। তৃণমূল শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার দল নয়।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আবারও সংযোজন, ‘‘গত সাত বছর বিরোধী হিসেবে কংগ্রেস বিজেপির কাছে শুধু হেরেছে। আর তৃণমূল জিতেছে।’’ অধীরের জবাব, এখন রাজনীতিতে সোশ্যাল মিডিয়া বড় অস্ত্র। রাহুল গাঁধী যখন টুইট করেন সেটা মোদীর ভিত কাঁপিয়ে দেয়। আর পিসি- ভাইপো কাজ করছেন সেই রাহুলের দলকে আক্রমণ করার জন্য।’’
প্রসঙ্গত, এ দিনই কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে ফের তৃণমূলের মুখপত্র লিখেছে, ‘তোমরা চিরকাল লড়বে বলে জায়গা আটকে রাখবে তারপর ডুবিয়ে দিয়ে বিজেপিকে সুবিধা করে দেবে তা আর হবে না।’