অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বাংলায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই ‘বিদায়ঘণ্টা’ বেজে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির ‘বিসর্জন’ নিশ্চিত। কর্নাটকের ফলপ্রকাশের দিনে দিল্লিতে পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার পূর্ব বর্ধমানে দলের ‘জনসংযোগ যাত্রা’র সভামঞ্চ থেকে দক্ষিণী রাজ্যের ভোটের ফল নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘কর্নাটকে ফল বেরিয়ে গিয়েছে। বিজেপি ভোকাট্টা হয়ে গিয়েছে। এ বার লোকসভায় হার শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’ তবে বিজেপিকে হারানোর প্রশ্নে কংগ্রেসের প্রসঙ্গ টানেননি অভিষেক। ঘটনাচক্রে, কর্নাটকের ফল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কংগ্রেসের নাম উল্লেখ করেননি অভিষেকের দলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
কর্নাটকে বিজেপির পরাজয়ে কন্নড় জনতাকেই কুর্নিশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। টুইটে লিখেছেন, ‘‘পরিবর্তনের পক্ষে যে জনাদেশ দিয়েছেন কর্নাটকবাসী, সে জন্য তাঁদের কুর্নিশ জানাই।’’ এর পর নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা লিখেছেন, ‘‘নৃশংস স্বৈরাচার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনীতি পরাজিত! যখন মানুষ বহুত্ববাদ এবং গণতান্ত্রিক শক্তির জয় চায়, তখন কোনও কেন্দ্রীয় শক্তি তাদের স্বতঃস্ফূর্ততাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। এটাই গল্পের সারমর্ম।’’ এই হার যে ‘আগামী দিনের জন্য শিক্ষা’, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। অভিষেক অবশ্য সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিদায়ঘণ্টা বাংলায় বেজেছিল। আজ কর্নাটকে ফল বেরিয়েছে। ভোকাট্টা হয়ে গিয়েছে। আগামী ২০২৪-এ দিল্লিতে পরিবর্তন এখন সময়ের অপেক্ষা।’’
শনিবার মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামের মাঠে সভা করেন অভিষেক। সেখানে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘২০২১-এ বাংলায় খুঁটি পুজো হয়েছে। ২০২৪-এ দিল্লিতে গিয়ে বিসর্জন দেব।’’ পঞ্চায়েতের পাশাপাশি লোকসভা ভোটের জন্যও জনতার উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘হাতে এক বছরও আর সময় নেই। পঞ্চায়েত হোক বা লোকসভা, নিজের অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিতে হবে। যে রাজনৈতিক দল আমার অধিকারের জন্য লড়বে আমি তাঁকে জেতাব। কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দিন।’’
অভিষেকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগামী লোকসভা পর্যন্ত তৃণমূল আগে নিজের দলটাকে বাঁচিয়ে রাখুক। তখন কে কোথায় থাকবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এ রকম অনেক হার আমরা দেখেছি। আজ যেখানে এসেছি, সেটা কারও দয়ায় নয়। ২ থেকে ৩০৩-এ পৌঁছেছি ভারতবর্ষের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘ভাগ্যিস বলেনি যে, ওদের অনুপ্রেরণায় কর্নাটকে বিজেপি হেরেছে! ২০২১-এ খুঁটিপুজো হয়েছে কি না বলতে পারব না। খুঁটিপুজো তো হয় আবাহন জানানোর জন্য, তার পর তো বিসর্জন। তা হলে বিজেপিকে পুজো করল কবে, আগে সেটা বলুক।’’