তৃণমূলের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজভবনের পথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে আমি বলেছিলাম, আপনার বাধ্যবাধকতা আছে। আপনি প্রয়োজনে দু’সপ্তাহ সময় নিন। কিন্তু রাজ্যপাল আমাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন। এ বিষয়ে উনি তৎপরতাও দেখিয়েছেন।’’
রাজ্যপাল আনন্দ বোসের সঙ্গে বৈঠকের পরেই রাজভবনের সামনে থেকে ধর্না তুলে নিতে চলেছে তৃণমূল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ মঞ্চে বলতে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, তিনিই সেই সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
তৃণমূলকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বকেয়া টাকা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। এর পর সোমবারই সন্ধ্যা পৌনে ৭টার বিমানে দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল। তৃণমূলের দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বার ধর্না তুলে নেবে তারা। রাজভবনের সামনে গত চার দিন ধরে অভিষেক ধর্না চালাচ্ছেন। তাঁর মূল দাবি ছিল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করা। সোমবার বিকেলে সেই সাক্ষাত হয়েছে। এ বার ধর্না উঠে যাবে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বকেয়া টাকা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তৃণমূলকে কথা দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। তেমনটাই খবর তৃণমূল সূত্রে। রাজভবন থেকে বৈঠক শেষে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে অবশ্য ২৪ ঘণ্টার কথা জানানো হয়নি। রাজ্যপাল বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন।
তৃণমূলের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজভবনের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি ধৈর্য ধরে অভিষেকদের বক্তব্য শুনেছেন। আশ্বাস দিয়েছেন যে, বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন এবং বাংলার মানুষের হিতার্থে যা করণীয়, তা করবেন।
রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দিয়েছে তৃণমূল। সেখানে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা এবং তাঁদের দাবি বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে।
রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক ভাল হয়েছে, জানালেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি তৃণমূলের ৩০ জনের প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। বৈঠক শেষে বেরিয়ে বলেন, ‘‘আমরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। চিঠিগুলো দিয়ে এসেছি। বৈঠক ভাল হয়েছে।’’
রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে অভিষেকদের বৈঠক চলল ২০ মিনিট ধরে। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসেন অভিষেক। দলের তরফে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
রাজভবনে অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক চলছে। সোমবার বিকেল ৪টেয় বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছেন রাজ্যপাল। প্রতিনিধিদের নিয়ে সময়ের আগেই রাজভবনে পৌঁছে যান অভিষেক। মোট ৩০ জনের প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়েছে।
রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনের সামনে গত বৃহস্পতিবার ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। রাজভবনের উত্তর গেটের সামনে অস্থায়ী শিবির তৈরি করে রাত কাটাচ্ছেন তিনি। সোমবার সেই ধর্না পঞ্চম দিনে পা রেখেছে।
অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের যে প্রতিনিধি দল রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছে, তার সদস্য সংখ্যা ৩০। এর মধ্যে সাত জন বঞ্চিত বা ভুক্তভোগী, অর্থাৎ যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা পাননি, তাঁদের পরিবারের সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া বাকিরা দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
কেন্দ্রের বকেয়া টাকা সুদ-সহ আদায় করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। তিনি ধর্নামঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী টাকা মেটাতে দেরি হলে নির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হয়। সেই সুদের নিয়ম অনুযায়ী আমরা সব টাকা কেন্দ্রের থেকে আদায় করব। বঞ্চিতদের টাকা পাইয়ে দেব।
অভিষেক ধর্নার শুরু থেকেই জানিয়ে আসছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে তিনি দু’টি প্রশ্ন রাখতে চান। এক, এই ২০ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেছেন কি না। দুই, যদি করে থাকেন, তা হলে কোন আইনের কোন ধারায় তাঁদের টাকা দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে? রাজ্যপালের মাধ্যমে এই প্রশ্নগুলি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও পৌঁছে দিতে চান বলে জানিয়েছেন।
১০০ দিনের কাজ করেও যাঁরা বঞ্চিত, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে যাঁরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ, তাঁদের তরফে গুচ্ছ গুচ্ছ চিঠি নিয়ে রাজভবনে ঢুকেছেন অভিষেকেরা। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ জানান, ২০ লক্ষের বেশি বঞ্চিত শ্রমিকের চিঠি তাঁরা রাজ্যপালকে দিতে চান। তৃণমূলের প্রতিনিধিদের এক এক জনের হাতে থাকবে ২০০ থেকে ৫০০টি করে চিঠি। সেগুলি আপাতত তাঁরা রাজ্যপালের হাতে তুলে দেবেন।
রাজভবনে বৈঠক করতে যাওয়ার আগে ধর্নামঞ্চ থেকে অভিষেক জানান, তাঁরা চেয়েছিলেন এই বৈঠক ক্যামেরার সামনে হোক। সংবাদমাধ্যমেরও প্রবেশের অনুমতি থাকুক। কিন্তু রাজভবন থেকে শুধু সংবাদমাধ্যমকেই নিষিদ্ধ করা হয়নি, সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বৈঠকে কেউ মোবাইল ফোন নিয়েও ঢুকতে পারবেন না। অর্থাৎ, সব আলোচনাই হবে ক্যামেরার আড়ালে।