তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে শালবনিতে সভা অভিষেকের। —ফাইল চিত্র।
নবজোয়ার কর্মসূচি শেষ হলে দিল্লির বুকে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শালবনির সভায় বলেন, ‘‘এক দিকে আমাদের মানবিক সরকার, আর বিজেপির দানবিক সরকার। বাংলার মানুষের ১০০ দিনের টাকা বন্ধ। এই কর্মসূচি শেষ হলে দিল্লির বুকে বৃহত্তর আন্দোলন করব।’’
তৃণমূলের বুথ সভাপতিদের প্রশংসায় অভিষেক। বলেন, ‘‘তৃণমূলের আসল সম্পদ হলেন দলের বুথ সভাপতিরা। কোনও নেতার ক্ষমতা নেই যে, দলকে দুর্বল করবে। বুথ সভাপতিরা জীবনের বাজি রেখে লড়াই করলে কারও ক্ষমতা নেই তৃণমূলকে প্রতিহত করবে।’’
তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির সাফল্যের কথা বললেন অভিষেক। শালবনির সভায় তিনি বলেন, ‘‘অনেক রাজনৈতিক দল বিদ্রুপ করেছিল এই কর্মসূচি নিয়ে। ৩১ দিন ধরে এই কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় আমরা আছি। কেউই আমাদের রুখতে পারেনি। দাবদাহ উপেক্ষা করে মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছে। মালদহের ১২৭ বছরের মহিলা আশীর্বাদ করতে দাঁড়িয়েছিলেন।’’
শালবনির সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টানোর জন্য লাইন দিন। সরকার বদলানোর জন্য লাইন দিন।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহার মতো। যত আঘাত করবেন, তত শক্তিশালী হবে লোহা। অনেক বাধা এসেছে। ভেবেছিল ইডি-সিবিআই লাগিয়ে নবজোয়ারে ভাটা আনবে। জনজোয়ারে পরিণত হয়েছে।’’
তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে শালবনির সভায় বক্তৃতা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকে কনভয়ে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন কুড়মি সমাজের নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তিনি জানিয়েছেন, এই অবরোধ আদিবাসী কুড়মি সমাজ সংগঠনের ছিল না। তাঁরা সাংবিধানিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, উগ্র আন্দোলনে নয়। তাঁর দাবি, কুড়মি আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার জন্য চক্রান্ত করা হতে পারে। এর সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার।
শুক্রবার কনভয় হামলার পর গজাশিমুলে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘আপনারা কেউ উত্তেজিত হবেন না। যারা করেছে, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করেছি। প্রশাসনও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে। ভদ্রতার খাতিরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেছি। খেলা তুমি শুরু করেছ, আমি শেষ করব।’’ অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘কুড়মিরা তো তফসিলি জনজাতির স্বীকৃতির জন্য লড়ছেন। তার পরেও তাঁরা কী করে জনজাতি মহিলার উপর হামলা চালালেন? এ সব হতাশা থেকে করা হচ্ছে।’’ কুড়মিদের বিক্ষোভে তিনি ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনেছেন বলে দাবি করেছেন অভিষেক। কুড়মিদের উদ্দেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, হামলার পিছনে তাঁরা সত্যিই রয়েছেন কি না, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক তা স্পষ্ট করতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শালবনি যাওয়ার পথে গড় শালবানিতে অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। সেই সময় অভিষেকের কনভয় ঘিরে রাস্তার দু’পাশে বিক্ষোভ দেখান কুড়মিরা। তফসিলি জাতির স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে সম্প্রতি টানা আন্দোলন করছেন তাঁরা। কুড়মি সম্প্রদায়ের ওই বিক্ষোভ ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। কনভয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।অভিষেকের কনভয়ের শেষ গাড়িতে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। হামলায় তিনিও আহত হন বলে নিজেই জানান মন্ত্রী। তাঁর গাড়িচালকও আহত হন।