গ্রাফিক—সনৎ সিংহ
ছোট থেকে বড় সব পড়ুয়ার জন্য রাজ্যের সমস্ত স্তরের স্কুল খুলে দিতে বললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য অভিজিৎ রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন, অবিলম্বে স্কুল সমস্ত স্তরের খুলতে হবে
রাজ্য সরকারকে নোবেলজয়ীর এই পরামর্শের নেপথ্যে যুক্তি, বাংলার পড়ুয়াদের বুনিয়াদি শিক্ষার মান পড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতির সমাধান করতেই অবিলম্বে সব স্তরের স্কুল খুলে দেওয়া দরকার। এমনকি, প্রায় দু’বছর পর স্কুলে ফেরা ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দেওয়ার সময় কী কী বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, তা-ও বলে দিয়েছেন অভিজিৎ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তাঁর ‘টিপস’, ‘‘এখন সিলেবাসের কথা না ভাবলেও চলবে। ছাত্র-ছাত্রীদের খামতিগুলো খুঁজে নেওয়াই আপাতত জরুরি। নতুন মনোভাব নিয়ে নতুন পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর কাজ শুরু করতে হবে।’’
কোভিড পরিস্থিতি শিশুশিক্ষায় কতটা প্রভাব ফেলেছে, সে সংক্রান্ত একটি বার্ষিক রিপোর্ট নিয়ে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ। রিপোর্টটি স্কুল শিক্ষার মান সংক্রান্ত একটি বেসরকরি সংস্থার করা বার্ষিক রিপোর্ট। তার ফলাফল নিয়ে অভিজিতের মন্তব্য, নিচু শ্রেণিতে পাঠরত পড়ুয়াদের শিক্ষার মান সংক্রান্ত যে ফল প্রকাশ্যে এসেছে, তাকে সুখবর বল যায় না।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যে ছোটদের বেসিক রিডিং বা বুনিয়াদি শিক্ষার মানের অবনতি হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রায় দু’বছর বন্ধ ছিল স্কুল। যদিও রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এই দু’বছরে স্কুলে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের সংখ্যা বিশেষ কমেনি। অর্থাৎ স্কুল বন্ধ থাকলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল ছেড়ে দিতে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। বরং ৯০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীর নামই এখনও স্কুলে রয়েছে। কিন্তু স্কুল না ছাড়লেও এবং নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ পেলেও পড়ুয়াদের বুনিয়াদি শিক্ষার মান অনেকটা পড়েছে। এমনকি নিচু শ্রেণির পড়ুয়াদের অনেকে অক্ষরও চিনতে পারছে না বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।
এ প্রসঙ্গেই আলোচনা করতে গিয়েই অভিজিৎ জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে প্রথমেই রাজ্যের সব স্তরের সমস্ত স্কুল খুলে দেওয়া দরকার। তারপর মন দিতে হবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ণে। গত দু’বছরে ছাত্রছাত্রীদের কোথায় কোথায় খামতি তৈরি হয়েছে তা বুঝে নেওয়াকেই আপাতত চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ। তা না হলে পরবর্তী কালে শিক্ষার্থীদের উঁচু শ্রেণির পড়াশোনা বুঝতে অসুবিধা হবে। এবং দেখা যাবে ভবিষ্যতে ওই ৯০ শতাংশ স্কুল নথিভুক্তির হারও কমতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, রাজ্যের গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য অভিজিৎ। রাজ্য সরকারকে এ প্রসঙ্গে তাঁর পরামর্শ, অবিলম্বে স্কুল সমস্ত স্তরের খুলতে হবে।