তার নির্দেশে কেনা বিস্ফোরক দিয়ে তারই ছকে বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। সেই বিস্ফোরণের পরে ধরপাকড় শুরু হতেই গা-ঢাকা দিতে রাজমিস্ত্রির ছদ্মবেশে মহারাষ্ট্রে পালিয়ে গিয়েছিল আব্দুল রহিম। বছর সাতেক আগে এক বেআইনি মাদ্রাসায় জেহাদি প্রশিক্ষণ নিয়েই জঙ্গি কাজকর্মে নেমে পড়েছিল সে।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, বীরভূম জুড়ে ফের জেহাদি গোষ্ঠী গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিল রহিম। জামাতুল মুজিহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ধুলিয়ান মডিউলের এই চাঁইকে গ্রেফতার করে জেরায় এ-সব জেনেছেন গোয়েন্দারা।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, জেহাদি নিয়োগের কাজ শুরু হয়েছে, এই খবর পেয়েই ফের রহিমের খোঁজখবর শুরু হয়। সোমবার রাতে বর্ধমানে আসার পথে কাটোয়া রোডের বাজেপ্রতাপপুরের চারখাম্বা থেকে রহিমকে পাকড়াও করে লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। রহিমই বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের মূল চক্রী। তার গ্রেফতারিকে বড় সাফল্য বলেই দাবি করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ২০১২ সালে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে একটি বেআইনি মাদ্রাসায় মৌলানা ইউসুফের অধীনে প্রথম জেহাদি প্রশিক্ষণ নেয় রহিম। ২০১৩ সালে শিমুলিয়া মাদ্রাসাতেও প্রশিক্ষণ নিয়েছিল সে। চোরাপথে বাংলাদেশেও যাতায়াত ছিল তার। সে সালাউদ্দিন নামে জেএমবি-র এক শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ। সালাউদ্দিন বাংলাদেশের কোনও গোপন ডেরায় রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরে আর এক জেএমবি জঙ্গি কওসরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে রহিমের। কওসরকে গ্রেফতার করার পরে জেরার সময় রহিমের নাম উঠে আসে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে জেএমবি-র আল কায়দাপন্থী সদস্যেরা রহিমের নেতৃত্বে ধুলিয়ান মডিউলে যোগ দেয়। এর আগেই কলকাতা ও হাওড়ায় চার জন নব্য জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা জেনেছিলেন, ‘দাওয়াত’ দিয়ে অর্থাৎ ভোজসভায় গ্রামীণ যুবকদের নিমন্ত্রণ করে খাইয়েদাইয়ে জেহাদি শিবিরে ডাকা হত। সেখানেই শুরু হত মগজধোলাইয়ের
পাঠ। রহিমের জন্য এই ধরনের দাওয়াতের আয়োজন করত ইব্রাহিম ওরফে লাল মহম্মদ নামে এক জেএমবি সদস্য। বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ছক করেছিল রহিম। আদিল নামে এক জঙ্গিকে দিয়ে বিস্ফোরক কিনেছিল সে। রহিমকে জেরা করে এ রাজ্যে জেএমবি-র নতুন সদস্যদের ব্যাপারে আরও তথ্য পেতে চাইছেন এসটিএফের গোয়েন্দারা।