বিজেপি দফতরের কাছে আম আদমি পার্টির (আপ) প্রতিবাদ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
আবগারি মামলায় ইডি-র হাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দিনভর বিক্ষোভ, প্রতিবাদসভা হল কলকাতায়। মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির পুরনো রাজ্য দফতরের সামনে আম আদমি পার্টির (আপ) পশ্চিমবঙ্গ শাখার কর্মসূচি ঘিরে অশান্তি ছড়াল। হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছে আপ, বিজেপি, দু’পক্ষই। সেই সঙ্গে, তৃণমূল কংগ্রেস এই গ্রেফতারের ঘটনাকে ভোটের মুখে বিরোধী দলের উপরে আক্রমণ বলে তোপ দেগেছে। পাল্টা, বিজেপি বিষয়টিকে রাজ্য রাজনীতিতে টেনে এনে কারও নাম না করে ফের কটাক্ষ করেছে, ‘মাফলারের পরে হাওয়াই চটি!’
আপের রাজ্য শাখার কর্মী-সমর্থকেরা এ দিন বিজেপির রাজ্য দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন। আপ নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আচমকা হামলায় তাঁদের মহিলা শাখার প্রধান-সহ অনেকে আহত হন। যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, দলের কর্মীদের যাতায়াতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যও করা হলে প্রতিবাদ করা হয়। বাধে ধস্তাধস্তি। আপ কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে ভেঙে গিয়েছে বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের গাড়ির কাচ। অভিযোগ, পুলিশ আপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, বিজেপি সমর্থকদের ভিতরে যেতে বলে। তমোঘ্নের অভিযোগ, “বাড়ি, দফতর ঘেরাওয়ের সংস্কৃতি বাংলায় ছিল না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করতে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বাকিরা সেটাই করছেন।”
কেজরীওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ দিন কলেজ স্কোয়ারে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করে ‘দেশ বাঁচাও গণ মঞ্চ’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন। পুরো বিষয়টিকে ‘অঘোষিত জরুরি’ অবস্থা বলেও তোপ দাগেন সংগঠনের নেতৃত্ব।
কেজরীওয়ালের গ্রেফতারের বিষয়টিকে সামনে রেখে কারও নাম না করে এ দিনও টিপ্পনী কেটেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। হুগলির বলাগড়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ইন্ডিয়া জোটের মুখ্যমন্ত্রীরা দুর্নীতি করেছেন, তাই জেলে যাচ্ছেন। কই নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়কেরা তো জেলে যাচ্ছেন না। সবাই বলছেন, এখন গেল মাফলার, পরের পালা হাওয়াই চটি।” কার্যত একই সুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বলেন, “যতই করো কান্নাকাটি, মাফলারের পরে হাওয়াই চটি। জনগণ স্লোগান তুলেছে। মাফলার ঢুকে গিয়েছে। এ বার হাওয়াই চটির সময় এসেছে।” রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ভোটের মুখে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে। বিজেপি-বিরোধীরা যে রাজ্যগুলিতে আছেন, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তা হলে স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যবস্থা নিতে পারবে তো নির্বাচন কমিশন?”