বাগডোগরার নাম বদল নিয়ে ভাবনা

ইতিমধ্যে রাজ্যের পর্যটন দফতরের কাছেও ওই নামবদলের দাবির কথা পৌঁছেছে। দেশের আর দশটা বিমানবন্দরের মতো ‘ব্রান্ডিং’ করার জন্য বাগডোগরার বিমানবন্দরের নামকরণ হওয়াটা জরুরি বলে মনে করছেন পর্যটন কর্তারা।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০৫:৪৩
Share:

রাজ্যের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর বাগডোগরা বিমানবন্দরের নামকরণের দাবি উঠল। শিলিগুড়ির বদলে কেন একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নামে বিমানবন্দর হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছে বণিক সভা সিআইআই। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সম্প্রতি সিআইআই-র ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিজয় দেওয়ান কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রকের সচিব প্রদীপ সিংহ খারোলাকে চিঠি দিয়ে সেই দাবির কথা জানিয়েছেন। দাবির সমর্থনে সিআইআই-র তরফে একাধিক তথ্য সম্বলিত যুক্তির কথাও মন্ত্রককে জানিয়েছে। পর্যটন সংগঠনগুলিও আবার বাগডোগরা নাম বদলের দাবি তুলেছে। শিলিগুড়িকে জুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিমানবন্দর বা তেনজিং নোরগে বিমানবন্দর করার কথা এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়াকে (এআইআই) জানিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

ইতিমধ্যে রাজ্যের পর্যটন দফতরের কাছেও ওই নামবদলের দাবির কথা পৌঁছেছে। দেশের আর দশটা বিমানবন্দরের মতো ‘ব্রান্ডিং’ করার জন্য বাগডোগরার বিমানবন্দরের নামকরণ হওয়াটা জরুরি বলে মনে করছেন পর্যটন কর্তারা। কিন্তু পুরো বিষয়টি কেন্দ্রের অধীনে হওয়ায় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রকেই নিতে হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি, বাগডোগরা বিমানবন্দরের নামটা বদল করা দরকার। বদলে কী করা হবে, সেটা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হতে পারে।’’

এএআই সূত্রের খবর, প্রায় ৮০০ কোটি টাকার বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা তৈরি হয়ে রয়েছে। রাজ্য সরকার জমি দিলে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অনুকরণে বাগডোগরায় কাজ হবে। সেই সময়ই বাগডোগরার নাম বদল হতে পারে বলে এআইআই-র অফিসারদের একাংশ মনে করছেন।

Advertisement

বণিকসভা সিআইআই কেন্দ্রকে জানিয়েছে, শিলিগুড়ি শহর গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। বিহার, সিকিমের মতো রাজ্যের সীমানা ছাড়াও শিলিগুড়িকে ঘিরে বাংলাদেশ, নেপাল সীমান্ত রয়েছে। এ ছাড়া চিন বা ভুটানের যোগাযোগ এই অঞ্চলে শিলিগুড়িকে ব্যবহার করেই হয়। ইতিমধ্যে এশিয়ান হাইওয়ে-২ এর মাধ্যমে শহর শিলিগুড়ি দিয়ে বাংলাদেশ এবং নেপালে যোগাযোগ তৈরি হয়ে গিয়েছে। পর্যটন এবং শিল্প বাণিজ্যের দিক থেকে দিন দিন শিলিগুড়ির গুরুত্ব বাড়ছে।

কিন্তু বাগডোগরা এলাকাটি শিলিগুড়ি মহকুমার একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মূল শহর শিলিগুড়ি, যা গোটা রাজ্যের দ্বিতীয় শহর এবং দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসাবে পরিচিত। গোটা উত্তরবঙ্গ, সিকিম, বিহারের বিরাট সংখ্যক যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করছেন। নাথুলা হয়ে কৈলাস মানসরোবর যাত্রার পূণ্যার্থীরা এই বিমানবন্দরকে ব্যবহার করছেন। সিআইআই-র নর্থবেঙ্গল এবং সিকিমের ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জিৎ সাহা বলেন, ‘‘আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই অঞ্চলের চেহারা অর্থনৈতিকভাবে আরও পাল্টাবে। বিমানবন্দর বড় হবে। কিন্তু এর একটা নাম থাকা প্রয়োজন। যা শিলিগুড়ির থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।’’

এখন বাগডোগরা দিয়ে রোজ ৩৭ জোড়া বিমান যাতায়াত করে। যাত্রী সংখ্যা বছরে ২২ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কলকাতা, দিল্লি, গুয়াহাটি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, আহমদাবাদে সরাসরি বিমান চলে। একটি আন্তর্জাতিক বিমানও রয়েছে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পর্যটক বিমানবন্দরে ব্যবহার করেন। একটি পর্যটন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘আমরা এএআই ইতিমধ্যে দু’টি নামের কথা বলেছি। এটি রবীন্দ্রনাথের নামে আর একটি তেনজিং নোরগের নামে। প্রয়োজনে আমরা আবার চিঠি দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement