প্রতীকী ছবি
থানার বাইরে মামলা নিয়ে কথা বলতে ডেকে এক পুলিশ আধিকারিক তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক মহিলা। বারাসত পুলিশ জেলার সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ তিনি পাঠিয়েছেন। অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে ওই আধিকারিকের দাবি, তাঁকে সংশ্লিষ্ট মামলাটি থেকে সরাতে ওই চক্রান্ত করা হয়েছে।আধিকারিকের পাল্টা দাবি, ``আমি চাই, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। মহিলাকে দেখাতে হবে, আমি কোথায় তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। একটি মামলাকে কেন্দ্র করে মহিলার স্বামীর ফেরার। তদন্তকারী অফিসার হিসেবে আমাকে মামলা থেকে সরাতেই ওই সাজানো অভিযোগ।’’ বারাসত পুলিশ জেলার সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ``অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।``
অগস্টের শেষ দিকে পুলিশ সুপারের অফিসে ওই অভিযোগ পাঠান ওই মহিলা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি দেগঙ্গা এলাকায়। তিনি জানান, দেগঙ্গায় তাঁর এক প্রতিবেশীর সঙ্গে গত মে মাস থেকেই তাঁদের গোলমাল চলছে। তাঁর অভিযোগ, `` এক প্রতিবেশী আমার স্বামীর বিরুদ্ধে দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে স্বামী আগাম জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। সেটির শুনানি হয়নি। এর মধ্যেই ওই প্রতিবেশী এবং তাঁর লোকজন অত্যাচার শুরু করেন। আমরা পুলিশকে জানাই। বারাসত আদালতেও মামলা দায়ের করি। ওঁরাও পাল্টা মামলা ওই
আদালতেই দায়ের করেন।`` পুলিশ সূত্রের খবর, দু’টি মামলাই আদালত থেকে তদন্তের জন্য দেগঙ্গা থানায় পাঠানো হয়।
মহিলার দাবি, জুন মাসে ওই আধিকারিক তাঁকে ফোন করে থানায় দেখা করতে বলেন। মহিলা তাঁর অভিযোগে দাবি করেছেন, ওই আধিকারিক পি সি পার্টির লোকজনকে দিয়ে ফোন করিয়ে একা দেখা করতে বলেন। যদিও আধিকারিকের দাবি, ‘‘আমি ওঁর শ্বশুরমশাইকে সঙ্গে নিয়ে থানায় দেখা করতে বলেছিলাম। কারণ, সামনাসামনি কথা বলার প্রয়োজন ছিল। ঘটনাচক্রে, দু’টি মামলার তদন্তকারী অফিসার আমিই। আমার প্রশ্ন ছিল, অপরাধ না করলে ওঁর স্বামী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন?`` পুলিশ সুপারের অফিসে পাঠানো অভিযোগপত্রে মহিলার অভিযোগ, ৭ সেপ্টেম্বর, বিকেল ৩টে নাগাদ তিনি ওই আধিকারিকের কথামতো দেগঙ্গা থানার কাছে গিয়ে তাঁকে ফোন করেন। এর পরে ওই আধিকারিক তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। প্রাথমিক কথাবর্তার পর ওই আধিকারিক নিজের বাইকে বসিয়ে মহিলাকে থানার কাছাকাছি একটি ঘরে নিয়ে যান।
মহিলার অভিযোগ, ``ওই ঘরে কাগজপত্র দেখতে দেখতে আচমকাই উনি আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি চিৎকার করে ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসি। উনি আমাকে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে বলেন, ঘটনার কথা কাউকে বললে তার ফল ভুগতে হবে।`` কিন্তু তিনি ওই আধিকারিকের বাইকে উঠলেন কেন? মহিলার দাবি, ``উনি বলেছিলেন, স্বামীকে একমাত্র উনিই মুক্ত করাতে পারবেন। কিন্তু ওই বিকেলের ঘটনার পরে এক দিন আমার দেওর এবং বৃদ্ধ শ্বশুরমশাইকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে। দেওরকে মারতে মারতে তাঁর আর্তনাদ ফোনে আমাদের শুনিয়ে পুলিশ আমাদের চাপ দেয়, যাতে স্বামী আত্মসমর্পণ করেন।``
মহিলার দেওর এবং শ্বশুরকে গ্রেফতারের কথা ওই আধিকারিক স্বীকার করলেও তাঁদের মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তাঁর দাবি, ``অভিযুক্তের সন্ধান পেতে ওঁদের তো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবেই। দেগঙ্গা থানা এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে একটি চক্র কাজ করছে। এ সব তাঁদেরই পরিকল্পনা। আমিও চাই সত্যিটা সামনে আসুক।``