পরিবারের সঙ্গে ইন্দ্রাণী। নিজস্ব চিত্র
অদম্য জেদের কাছে হার মানছে মারণব্যাধি।
ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই সুযোগ মিলল। কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলেন ইন্দ্রাণী বিশ্বাস। ইন্দ্রাণী থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। বয়স যখন মাত্র সাত মাস, তখনই তাঁর থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে। সেই থেকে লড়াই শুরু। পরিজনেরা শুনেছেন, ‘ও তো বেশি দিন বাঁচবে না’। কতজনের কাছে এমন কথা শুনেছেন ইন্দ্রাণী নিজেও। তবু ভয়ে গুটিয়ে থাকেননি। ইচ্ছাপূরণের পথে এগিয়েছেন।
ইন্দ্রাণী থাকেন মেদিনীপুর শহরের বিধাননগরে। আদি বাড়ি বাঁকুড়ার সারেঙ্গার নিবড়ায়। বাবা অভিজিৎ বিশ্বাস স্কুলশিক্ষক। মা তনুজা বিশ্বাস গৃহবধূ। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা বাঁকুড়ার গড়গড়িয়া সুভাষ হাইস্কুলে। পরে মেদিনীপুরে এসে নির্মল হৃদয় আশ্রম (বালিকা) হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন ইন্দ্রাণী। চিকিৎসার সুবিধার্থেই মেদিনীপুরে আসা। পরিবার সূত্রে খবর, শুরুর দিকে মাসে একবার রক্তের প্রয়োজন হত ইন্দ্রাণীর। এখন মাসে দু’বার রক্ত লাগে। রক্ত নিতে হয় কলকাতার হাসপাতালে গিয়ে। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তাঁর। রক্তের জটিল রোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার অভ্যাসও ছোট থেকেই। ডাক্তারি পড়ার জন্য সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় বসেছিলেন। সফল হয়েছেন। কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন ইন্দ্রাণী। ইতিমধ্যে কলেজে ভর্তিও হয়েছেন। ভবিষ্যতে হেমাটোলজি নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।
তনুজা বলছিলেন, ‘‘মেয়ের যখন সাত মাস বয়স, তখন আমরা জানতে পারি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। নিজের জেদে ও এতদূর এগিয়েছে।’’ আর থ্যালাসেমিয়ার মতো মারণরোগের সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে চলা ডাক্তারি পড়ুয়া ইন্দ্রাণীর বার্তা, ‘‘ভয় না পেয়ে নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।’’
ইন্দ্রাণীর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সবাই।