কাজল শেখ। —ফাইল ছবি।
সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো বার্তা ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে বীরভূমে। ওই অডিয়ো বার্তায় কাউকে ‘বরবাদ’ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে, অডিয়ো ক্লিপে বক্তা নিজেকে কাজল শেখ বলে দাবি করে বলেছেন, ‘‘সাথ (সঙ্গ) ছেড়ে যা, না হলে লাইফ বরবাদ করে দেব। কেরিম খানের মতো লোককে আমি হজম করে দিয়েছি। তোরা তো বাচ্চা আমার কাছে!’’
গরুপাচার মামলায় জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পরে কাজল শেখ জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন। তার পরেই অনুব্রত অনুগামী হিসাবে পরিচিত জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান, নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরারা দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি অনুব্রত জামিন পেয়ে জেল থেকে ফেরার পরে নিজের এলাকা, নানুরের বাসপাড়ায় কেরিম খানকে ঘিরে উল্লাস দেখান তাঁর অনুগামীরা। স্থানীয় আতকুলা গ্রামে নৈশভোজের আসরও বসে।
অনুব্রত ফেরার পরেই বাসাপাড়ায়, তৃণমূল কার্যালয়ে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে কাজল বলেছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে পাঙ্গা নিতে এসো না। যে-দিন গোটাব, সে-দিন সব গুটিয়ে দেব!’’ কাজল কারও নাম নেননি ঠিকই। কিন্তু, কর্মীদের একাংশের দাবি, সভাধিপতির নিশানায় আসলে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত আব্দুল কেরিম খান। এ বার যে অডিয়ো ক্লিপ সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেখানেও ‘কেরিম খানের মতো লোককে হজম’ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যাঁর উদ্দেশে হুমকি, তিনি স্থানীয় কোনও তৃণমূল কর্মী বা সমর্থক বলেই দলের একাংশ মনে করছে।
কেরিম নিজে অবশ্য বলেন, ‘‘কে কাকে কী বলেছেন, কেনই বা আমার নাম নিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ কাজল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমি কাউকে হুমকির সুরে কথা বলি না। এ ভাবে কথা বলার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না।’’
বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘আমি অডিয়ো বার্তাটি শুনেছি। গলা কাজল শেখের বলেই মনে হয়েছে। কাকে হুমকি দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন, তা বলতে পারব না। তবে উনি ওই সুরেই আমাদের অনেক কর্মী-সমর্থককেও মাঝেমধ্যে হুমকি দিয়ে থাকেন।’’