মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
৮ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পেতে চলেছেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের একাংশ। এই ডিএ পাবেন বিশেষ কিছু স্কুলে কর্মরত শিক্ষকেরাই। অর্থ দফতর সম্প্রতি এই সংক্রান্ত অর্থ বরাদ্দের চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে শিক্ষা দফতরে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গত মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে ৮ শতাংশ ডিএ পাবেন ওই সব স্কুলের শিক্ষকেরা। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহেই শিক্ষা দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই শিক্ষকদের ডিএ দেওয়ার ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে।
যেখানে সর্বস্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৩ শতাংশ হারিয়ে ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে কেন ওই বিশেষ স্কুলে শিক্ষকদের ৮ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়া হবে? অর্থ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি নিয়ম ও বিধি মেনেই এই ডিএ দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনও রকম আইনি বা পদ্ধতিগত ত্রুটি নেই।
শিক্ষা দফতরের খাতায় ‘ডিএ গেটিং স্কুল’ বলে চিহ্নিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে কর্মরত শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা এই ডিএ পাবেন। রাজ্যে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৪০। যার মধ্যে রয়েছে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল, কারমেল, মহেশ্বরী হাইস্কুল, জালান বালিকা বিদ্যালয়, পাঠভবন, মারোয়াড়ি বালিকা বিদ্যালয়, তাতিয়া হাই স্কুল। এই বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকদের বেতন দিয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি কিংবা গভর্নিং বডি। সাধারণ সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতনের তুলনায় এই স্কুলের শিক্ষকদের বেতন অনেকটাই কম। এই স্কুলের শিক্ষকেরা বর্তমানে রোপা ২০০৯ অনুযায়ী বেতন পান। এই কারণেই তাঁদের ক্ষেত্রে ডিএর পরিমাণ বেড়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে বলে অর্থ দফতর সূত্রে খবর।
২০২১ সাল থেকে এই শিক্ষকদের ডিএ বকেয়া ছিল। ২০২৩ সালে রাজ্য সরকার ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করলেও, তাঁরা সেই ডিএ পাননি। আবার গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকুট পাঠিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে দিয়ে আরও ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করে দেন। তাই এই ৪০টি স্কুলের ক্ষেত্রেও দু’টি ডিএ যোগ করে মার্চ মাস থেকে ১৬ শতাংশ হারেই ডিএ পাবেন শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা।
এ ক্ষেত্রেও একটি প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। সংগঠনের নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘গত দু’বছর ওই সব স্কুলের শিক্ষকেরা ডিএ পাননি। তাই তাঁদের বকেয়া ডিএ পাওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে তাঁদের ডিএ বকেয়া ছিল। ৮ শতাংশ হারে সেই বকেয়াও মেটানো উচিত সরকারের। আশা করি যে ভাবে মার্চ মাস থেকে ১৬ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে, সে ভাবেই তাঁদের ওই বকেয়া ডিএ-ও দেওয়া হবে।’’ বিষয়টি তাঁরা অর্থ দফতরের নজরে এনেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।।