৩৫ বছর পর যুদ্ধজয়! হাই কোর্টের নির্দেশে বকেয়া বেতন পাবেন ৭৬ বছরের শিক্ষিকা

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের নির্দেশে আট সপ্তাহের মধ্যে ১০ শতাংশ সুদ-সহ ২৫ বছরের বকেয়া বেতন পাবেন ওই শিক্ষিকা।

Advertisement

ভাস্কর মান্না

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ১৪:১৪
Share:

হাই কোর্ট চত্বরে আইনজীবীর সঙ্গে শ্যামলী ঘোষ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

টানা ২৫ বছরের বেতন বাকি ছিল। তবে তা হাতে পেতে গত ৩৫ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক স্কুল শিক্ষিকা। অবশেষে তাঁর মামলার সুরাহা হল। কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, অবিলম্বে সুদে আসলে ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার বেতন মিটিয়ে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের এই রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই শিক্ষিকা। পরে জানান, দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত যে তিনি সুবিচার পেয়েছেন, তাতেই তিনি খুশি।

শিক্ষিকার নাম শ্যামলী ঘোষ। এখন তাঁর বয়স ৭৬। হাওড়ার শ্যামপুরের একটি স্কুলে ১৯৭৬ চালে শিক্ষকতার চাকরি পান তিনি। তৎকালীন শিক্ষক নিয়োগের যাবতীয় নিয়ম মেনে ইন্টারভিউ দিয়েই চাকরি পাকা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু ঠিক চার বছরের মাথায় পরিস্থিতি বদলে যায়। স্কুল তাঁকে জানিয়ে দেয়, তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে। কেন, কী জন্য চাকরি গেল, তা অবশ্য জানানো হয়নি তাঁকে।

Advertisement

১৯৮০ সালের পর থেকে ওই শিক্ষিকাকে আর স্কুলে ঢোকার অনুমতি দেননি প্রধান শিক্ষক। কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া স্কুলে আর আসতে হবে না। তার পর থেকে ২০০৫ সালে তাঁর অবসরের সময় পর্যন্ত টানা ২৫ বছর কোনও বেতনও পাননি তিনি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দেয় বাকি থাকা ওই ২৫ বছরের বেতন ১০ শতাংশ সুদ-সহ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে শিক্ষিকাকে। এ ব্যাপারে স্কুল পরিদর্শক এবং শিক্ষা দফতরকে একটি নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ জানান, আট সপ্তাহের মধ্যেই যেন বকেয়া বেতন মেটানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়।

অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ ওই শিক্ষিকার মামলাটি লড়েছেন আইনজীবী রবিলাল মৈত্র। তিনি জানিয়েছে, ৩৫ বছর ধরে নিজের দাবি নিয়ে মামলা চালিয়া যাওয়া সহজ ছিল না। পদে পদে নিরাশ হয়েছেন শ্যামলী। তবু থেমে যাননি। লড়াই জারি রেখেছেন। ১৯৮০ সালে ওই ঘটনার পরই শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। তাঁর যোগ্যতার নিরিখে অর্জিত শিক্ষকতার চাকরি কেন কেড়ে নেওয়া হল? তা জানতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে। কিন্তু শিক্ষা দফতর সেই আবেদনের কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি।এরপর ১৯৮৬ সালে আদালতের দ্বারস্থ হন শ্যামলী। সেখানেও মামলাটি চলতে থাকে দীর্ঘদিন। ২০১৩ সালে হাই কোর্ট তাঁর পেনশনের ব্যবস্থা করলেও বকেয়া বেতনের ব্যাপারে কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর তাঁর আবেদনে সাড়া দিল আদালত।

Advertisement

আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:

(এই খবরটি সবেমাত্র দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত খবরটি কিছু ক্ষণের মধ্যেই আসছে। অপেক্ষা করুন।

পাতাটি কিছু ক্ষণ পর পর রিফ্রেশ করুন। আপডেটেড খবরটি আপনি দেখতে পাবেন।

অতি দ্রুততার সঙ্গে আপনার কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার সময়েও আমরা খবরের সত্যাসত্য সম্পর্কে সচেতন। সেই জন্যই যে কোনও ‘খবর’ পাওয়ার পর, তার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই আমরা তা প্রকাশ করি। ফেক নিউজ বা ভুয়ো খবরের রমরমার সময়ে এটা আরও বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement