স্ত্রী পুতুল এবং ছেলে সুজনের সঙ্গে হরি মাঝি। নিজস্ব চিত্র
ঠিক যেন রিলের গল্প রিয়েলে। বস্তিবাসী এখন কোটিপতি! ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে দেখা লাখপতি হওয়ার স্বপ্নটা এক বেলাতেই সত্যি হয়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বাসিন্দা হরি মাঝির জীবনে। শখ করে কাটা লটারিই দিন বদলে দিয়েছে জন্ম ইস্তক মূক এবং বধির হরির।
ভাতারের বামোশোর গ্রাম। এখানে ঢলদিঘির পাড়ে বাড়ি হরির। বাড়ি বলতে মাটির দেওয়াল, খড়ের ছাউনি। বর্ষাকালে বৃষ্টি ঘর ভাসিয়ে দেয়। বিধবা মা, স্ত্রী এবং এক ছেলেকে নিয়ে হরির সংসার। পেশায় তিনি মজুর। তাই সংসারের অবস্থাও দিন আনি দিন খাই। বছর আঠেরোর ছেলে সুজন অনেকদিন আগেই পড়াশোনা ছেড়ে জুটেছে বাবার সঙ্গে, মজুরের কাজে। কিন্তু হরির জীবনে দারিদ্র ঘোচে কই!
কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সেই অভ্যাস যে এক লহমায় যে ঘুচে যাবে তা কি কেউ আন্দাজ করতে পেরেছিল! প্রতি দিনের মতো সোমবার সকালে ভাতার বাজারে গিয়েছিলেন হরি। কী মনে হয়েছিল গ্যাঁটের ৩০ টাকা খরচ করে লটারি কেটে বসেছিলেন। যদি ভাগ্য ফেরে। হলও তাই। সকালে যে মানুষটা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মুটেগিরি করছিলেন বিকেলে ফল বেরোতেই দেখা গেল এক কোটি টাকা জিতেছেন তিনি। বামোশোর গ্রামের সেই কোটিপতি হরিকে দেখতে এখন ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: বহু দিন পর শুভেন্দুর মুখে ‘নেত্রী’, বার্তা কি কালীঘাটকে
আরও পড়ুন: ক্যানিং থেকে গ্রেফতার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল-সহ ৩
হরির স্ত্রী পুতুল বলেন, ‘‘স্বামী মাঝে মাঝে লটারির টিকিট কাটতেন জানি। এ দিন ছেলের থেকে ৩০ টাকা চেয়ে নিয়ে সকালে বাজারে গিয়েছিলেন উনি। তা দিয়েই লটারি কাটেন। বিকেলে জানতে পারি ওই লটারিতে এক কোটি টাকা পড়েছে।’’ কথা বলতে না পারলেও, কোটি টাকা জেতার আনন্দ ঠিকরে পড়ছে হরির চোখ মুখ বেয়ে। মা-কে ইশারায় জানিয়ে দিয়েছেন, এ বার পাকা বাড়ি তৈরি করবেন।
পাড়ার হরি এখন কোটিপতি। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ আবার বলছেন, ‘‘রাখে হরি মারে কে!’’