অনুব্রত মণ্ডল ও শিবঠাকুর মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে নেওয়ার পিছনে রাজ্য পুলিশের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে। এর ফলে তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করা সম্ভব হয়নি। এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাটি করেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস।
আদালতে মামলাকারীর আবেদন, শিবঠাকুর মণ্ডলের অভিযোগের পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখুক সিবিআই। একই সঙ্গে দুবরাজপুর থানার এফআইআর খারিজ করা এবং ইডি যাতে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করার জন্য উচ্চ আদালতকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
শুক্রবারই অন্য একটি মামলায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ অনুব্রতের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের কাছে যে মামলা হয়েছে, তার কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। গরু পাচার মামলায় শুক্রবার হাই কোর্টে অনুব্রতের জামিনের মামলা ছিল। সেই মামলার শুনানিতেই শিবঠাকুরের দায়ের করা অভিযোগের কেস ডায়েরি চায় হাই কোর্ট। গরু পাচার মামলায় আপাতত জামিন মেলেনি অনুব্রতের।
অনুব্রতের আইনজীবী কপিল সিব্বলের উদ্দেশে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘আপনার মক্কেল এতই ওজনদার (ভিআইপি) যে, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই তদন্ত করতে চায়।’’ একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দেয়, নিম্ন আদালতের বিচারককে হুমকির ঘটনায় রাজ্য কী তদন্ত করেছে তা-ও জানাতে হবে। আগামী ৩ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তার পর যত সময় এগিয়েছে, ততই এই মামলার তদন্ত নানা দিকে মোড় নিয়েছে। পরে ইডির হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত। এই মামলায় ‘কেষ্ট’কে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদনে সম্প্রতি সায়ও দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। কিন্তু, দিল্লির আদালতের এই সম্মতির পর পরই অনুব্রতের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে হইচই ফেলে দেন বীরভূমের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের মেজে গ্রামের বাসিন্দা শিবঠাকুর।
গত সোমবার অনুব্রতের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন শিবঠাকুর। তিনি জানান, ২০২১ সালে অনুব্রত তাঁকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন। শিবঠাকুরের এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটিতে অনুব্রতকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অনুব্রত বর্তমানে রয়েছেন দুবরাজপুর থানায়। এর জেরে অনুব্রতের দিল্লিযাত্রা থমকে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুবরাজপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন শিবঠাকুর।