মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
বকেয়া স্কুল ফি মেটানোর ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হচ্ছে ১৫ অগস্ট, শনিবার। তার আগে, আজ, শুক্রবার আবার বিক্ষোভে নামছেন বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অন্যান্য ফি বাদ দিয়ে তাঁরা মেটাবেন শুধু টিউশন ফি। এই বিষয়ে তাঁরা অভিভাবক সংগঠন ইউনাইটে
আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে দাবিপত্র দেবেন।
ড গার্জিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন গত ২০ জুলাই একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বেসরকারি স্কুলে ফি বাড়াতে নিষেধ করেন। লকডাউনের জন্য স্কুল বন্ধ থাকায় বাসভাড়া, লাইব্রেরি ফি-সহ যে-সব ফি বা চার্জ নেওয়া উচিত নয়, সেগুলি নেওয়া যাবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। কিন্তু শিক্ষাসচিবের সেই বিজ্ঞপ্তি এখনও কার্যকর হয়নি। আমরা সেটি বাস্তবায়িত করার দাবি জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা দাবিপত্রে আমরা এই সব বিষয়ই তুলে ধরছি।’’
অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা কখনওই বলেননি যে, স্কুল ফি দেবেন না। তাঁরা জানিয়েছিলেন, অতিমারির এই দুঃসময়ে অন্য কোনও ফি দেবেন না, শুধু টিউশন ফি দেবেন। কারণ, অতিমারির জন্য স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়ারা তো এখন পরিষেবাই পাচ্ছে না। কিছু স্কুল লাইব্রেরি ফি, ল্যাবরেটরি ফি-সহ নানাবিধ ফি-কে টিউশন ফি-র মধ্যে নিয়ে এসেছে। যে-সব স্কুল ওই সমস্ত কিছুকে টিউশন ফি-র অন্তর্ভুক্ত করেছে, তাদের ক্ষেত্রে তাঁরা টিউশন ফি-র অর্ধেক দেবেন বলেও জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহ মর্গে করোনায় মৃতের দেহ
এক শ্রেণির বেসরকারি স্কুলের বক্তব্য, শুধু টিউশন ফি নিলে স্কুল পরিচালনা করতে অসুবিধা হতে পারে। এমনকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনও ঠিকমতো দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কিছু স্কুল। তবে অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরাও চান, স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সকলেই পুরো বেতন পান। ‘‘স্কুল-কর্তৃপক্ষের যদি সদিচ্ছা থাকে, তা হলে শুধু টিউশন ফি নিয়েও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পুরো বেতন দেওয়া যায়। এবং স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রেও কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়,’’ বলেন এক অভিভাবক। এই অবস্থায় তাঁদের সংগঠন জানিয়েছে, শুধু কলকাতা নয়, ১৪ অগস্ট উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি-সহ সারা রাজ্যেই তাঁরা নিজের নিজের এলাকায় বিক্ষোভ সংগঠিত করবেন।
হাইকোর্ট তো সাম্প্রতিক নির্দেশে বলেছে, বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ১৫ অগস্টের মধ্যে বকেয়া ফি-র অন্তত ৮০ শতাংশ মেটাতেই হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী অভিভাবকেরা কি ফি দিতে শুরু করেছেন?
‘‘যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা দিচ্ছেন। কিন্তু করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আমপানে বহু অভিভাবক আর্থিক দিক থেকে বিপর্যস্ত। তাঁরা পুরো ফি দেবেন কোথা থেকে,’’ পাল্টা প্রশ্ন এক অভিভাবকের। তাঁদের সংগঠনের তরফে সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘হাইকোর্ট কিন্তু কখনওই বলেনি যে, ফি না-দিলে অনলাইনে ক্লাস করতে দেওয়া যাবে না। কোর্ট যা বলেছে, তার তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’’