শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।
আগরতলা ও বোলপুর, ২৫ জুন: চর্চার কেন্দ্রে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং তার পরিচালক সংস্থা। কিন্তু তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় বিজেপির ভিন্ন সুর কেন, উঠল সেই প্রশ্ন।
বছর তিনেক আগে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়াকে চিঠি লিখে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আর্জি জানিয়েছিলেন, বোলপুরের বেসরকারি ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’-কে যেন অনুমোদন না দেওয়া হয়। তাঁর দাবি ছিল, খাতায়-কলমে এই মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে একটি সংস্থা থাকলেও আড়াল থেকে তা চালান তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট), যাঁর বিরুদ্ধে গরু পাচার থেকে কয়লা কেলেঙ্কারির মতো অভিযোগের তদন্ত চলছে। কিন্তু শুভেন্দুর দল বিজেপির শাসিত ত্রিপুরায় সেই একই সংস্থার পরিচালনায় ‘ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’ খোলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটি আগরতলার সরকারি ‘ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল’-কে টিচিং হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে সাইনবোর্ডও ঝোলানো হয়েছে।
ত্রিপুরার বিজেপির প্রধান মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্য, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটির নিজস্ব পরিকাঠামো তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তারা সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করবে। ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও এমন ঘটনা হয়েছে। তবে শুভেন্দুর চিঠির বিষয়ে বিজেপির মুখপাত্র কোনও মন্তব্য করেননি।
ত্রিপুরার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, বেসরকারি কর্তৃপক্ষের হাতে ত্রিপুরার প্রাচীন হাসপাতালটিকে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারি তরফে কোনও সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা হয়নি। কোনও বিল আসেনি। ওই একই হাসপাতালে ডেন্টাল ও নার্সিং কলেজও চলছে। এ বার বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে তাঁদের জিনিসপত্র আনতে শুরু করায় সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো স্থান সংকুলান হওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন জিতেন্দ্র। তিনি লিখেছেন, ‘স্বাধীন ট্রাস্ট’ নামে পশ্চিমবঙ্গের একটি সংস্থা ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’ খুলতে আগরতলার সরকারি হাসপাতালটিকে ব্যবহারের জন্য ত্রিপুরা সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, এই ‘স্বাধীন ট্রাস্ট’-এর নেপথ্যে রয়েছেন দুর্নীতির দায়ে বিচারাধীন জেলবন্দি অনুব্রত। কাজেই এই সংস্থাকে যেন ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’ চালাতে দেওয়া না হয়। জিতেন্দ্র লিখেছেন, ‘এই কথা সত্যি হলে একই সংস্থাকে ত্রিপুরায় মেডিক্যাল কলেজ চালাতে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও দু’বার ভাবা উচিত।’ বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, কিন্তু ত্রিপুরার এক প্রভাবশালী বিধায়কের মদতেই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটি খোলা হচ্ছে।
মলয় পীঠের বক্তব্য, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ বা স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন করার জন্য আমরা কাজ করি। যে রাজ্যে যে সরকারই থাক না কেন, তারা চায়, স্বাস্থ্য পরিষেবা যেন
ভাল হয়।’’