landslide

Tourist Stranded: সারা রাত ঘুম নেই, রাস্তায় ধস, ঝড়বৃষ্টিতে গাড়ির মধ্যেই বসে রইলাম সকলে

সারা রাত ঘুম নেই। ঝড়বৃষ্টিতে গাড়ির মধ্যেই বসে রইলাম সকলে। কখন ধস নামবে, গাড়ি খাদে পড়লে কী হবে— এ সব চিন্তা ঘুরছে মাথায়।

Advertisement

সুমন্ত বসু

মালবাজার শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২১ ০৭:২৫
Share:

ধসে বন্ধ পাহাড়ের একাধিক রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার বিকেলে লাভা থেকে রিশিখোলা রওনা হয়েছিলাম। মালবাজার থেকে সেখানে বন্ধুর আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। দুপুর থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। ধসও নেমেছে পাহাড়ি রাস্তায়। সংস্কারের কাজ হচ্ছিল। আস্তে আস্তে গাড়ি উপরে উঠতে শুরু করে। রিশিখোলা পৌঁছানোর আগে হঠাৎ থমকে গেল সমস্ত গাড়ি। শোঁ শোঁ শব্দ চারদিকে। গাড়ি থেকে নেমে দেখলাম পাথর পড়ছে। সামনের পিচ রাস্তা ধস নেমে পুরো বসে গিয়েছে। রাত যত ঘনিয়ে আসছিল, ঝড়বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছিল না। আশপাশে কোনও বাজার বা বাড়িও নেই। আমাদের সঙ্গে আরও ১৫টির বেশি গাড়িতে পর্যটকরা ছিলেন। অনেকের শিশু ছিল। কালিম্পং জেলার হেল্প ডেক্সে ফোন করলে স্থানীয় পুলিশের নম্বর পাই। তাঁকে ফোন করলে তিনি জানান, সকাল না হলে কিছু করা যাবে না।

Advertisement

সারা রাত ঘুম নেই। ঝড়বৃষ্টিতে গাড়ির মধ্যেই বসে রইলাম সকলে। কখন ধস নামবে, গাড়ি খাদে পড়লে কী হবে— এ সব চিন্তা ঘুরছে মাথায়। খুব আসহায় লাগছিল। জীবন হাতে নিয়ে রাত কাটালাম। বুধবার সকালে ফের ফোন পুলিশের ওই নম্বরে। ‘যাচ্ছি, যাব’ করে সকাল ১০টাতেও কেউ যাননি। খাবার জল থাকলেও তা রাতে শেষ হয়েছে। ঘুরপথে কালিম্পং হয়ে ফেরার রাস্তাতেও ধস নেমেছে। মাঝপথে একরকম বন্দি দশা।

ছোট বাচ্চারা খাবারের জন্য কাঁদছিল। তা দেখে নিজেরও কান্না পাচ্ছিল। ফের ফোন ওই নম্বরে। তখনও ‘হচ্ছে, হবে’ করে কাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। সাহায্যে জন্য যে যেখানে পারে, তখন ফোন করছে। দুপুর ১২টায় কোনওরকম গাড়ি যাওয়ার পথ করে দেওয়া হল। লাভায় ফিরে শিশুরা যেন জীবন ফিরে পেল। কী করে বাড়ি ফিরব, তখনও জানি না। শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি উঠলে বিকেল ৩টে নাগাদ আমরা নামা শুরু করি। মালবাজারে পৌঁছই সন্ধ্যায়।

Advertisement

আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়া হয়নি। কিন্তু নতুন জন্ম হল যেন।

(লেখক পেশায় হাসপাতালের কর্মী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement