নিউটাউনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আলিয়ার পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
পথদুর্ঘটনায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল নিউটাউনে। সোমবার বিকেলে নিউটাউন থানার দিক থেকে বিশ্ববাংলা গেটের দিকে এগোতে শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল পড়ুয়া। পুলিশ বিশ্ব বাংলা গেটের আগেই তাঁদের আটকে দিলে রাস্তাতেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, ঘাতক গাড়ির মালিক এবং চালকের নাম প্রকাশ্যে আনতে হবে। দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন পড়ুয়ারা।
সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন নিউটাউনের ডিসি। তিনি পৌঁছনোর পরেই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। ডিসি জানান যে, গাড়িটিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। সোমবার রাতের মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তবে এর পরেও পড়ুয়ারা বিক্ষোভ তুলতে রাজি হননি। তাঁরা গাড়ির চালক, মালিকের নাম প্রকাশ্যে আনা এবং তাঁদের কঠোর সাজা দেওয়ার দাবি জানান।
পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে ডিসি জানান, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন প্রতীক খাঁড়া নামের এক জন ব্যক্তি। পরিবহণ দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, একটি সংবাদমাধ্যমের নামে গাড়িটি নথিবদ্ধ রয়েছে। গাড়ির মডেল এবং নম্বর প্রকাশ্যে আনলেও এর বেশি কিছু বলতে চায়নি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থেই অতিরিক্ত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে দাবি তাদের। যদিও পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রভাবশালীদের বাঁচানোর জন্যই সব তথ্য প্রকাশ্যে আনছে না পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তামিম আখতার জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীকে গ্রেফতার করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা হলে, তাঁরা অবস্থান তুলবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত সোমবার বছরের প্রথম দিনেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঘটে দুর্ঘটনা। শাকিল আহমেদ নামের এক পড়ুয়াকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বেরোনোর সময় তাঁকে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। ছিটকে রাস্তার পাশে পড়ে যান ওই ছাত্র। সার্ভিস রোডে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন শাকিল। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা দাবি করেন, বেপরোয়া গতির বলি হতে হয়েছে ওই যুবককে। পুলিশের তরফে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শাকিলের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছিলেন তিনি।
পরে পুলিশের অনুরোধে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন পড়ুয়ারা। পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হলে পড়ুয়ারা আবার অবস্থান বিক্ষোভে বসার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন।