Teacher Crisis

বদলিতে পদ খালি, শিক্ষক নিচ্ছে স্কুলই

শিক্ষক চেয়ে স্কুলে এবং এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন অর্জুনপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। কোন কোন বিষয়ে আংশিক সময়ের শিক্ষক চাই, তাঁদের বেতন কত হবে, তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৬:১৫
Share:

শিক্ষক-সঙ্কটে ভুগছে রাজ্যের বহু স্কুল। প্রতীকী ছবি।

একে তো নিয়োগ নেই বহু কাল। তার উপরে শিক্ষকদের বদলি-জটের সুরাহায় উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করায় গ্রাম ছেড়ে শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের শহরে যাওয়ার হিড়িক পড়ে যাওয়ায় অনেক স্কুলের কী হাল হয়েছে, মুর্শিদাবাদের অর্জুনপুর হাইস্কুল তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। পরের পর শিক্ষক উৎসশ্রী-বাহনে অন্যত্র চলে যাওয়ায় ৬০ জন শিক্ষক নিয়ে ধুঁকছে আট সহস্রাধিক পড়ুয়ার অর্জুনপুর হাইস্কুল। শিক্ষক-সঙ্কট এমনই ঘোরতর চেহারা নিয়েছে যে, সরকারের নিয়োগের অপেক্ষায় না-থেকে শিক্ষক চেয়ে স্কুলে এবং এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সেখানকার কর্তৃপক্ষ। কোন কোন বিষয়ে আংশিক সময়ের শিক্ষক চাই, তাঁদের বেতন কত হবে, তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

Advertisement

অর্জুনপুর স্কুলের বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা, ইংরেজি, ভূগোল, ইতিহাস, সংস্কৃত ও কর্মশিক্ষা মিলিয়ে মোট ১২ জন শিক্ষক চাওয়া হয়েছে। বিএড-সহ স্নাতকোত্তর পাশ শিক্ষকদের বেতন ৪৫০০ এবং বিএড-সহ স্নাতক শিক্ষকদের বেতন ৪০০০ টাকা। চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে ১৩ থেকে ১৭ ডিসেম্বর।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরফ মোমিন বলেন, “স্কুলে এখন শিক্ষক রয়েছেন ৬০ জন। আট হাজারের কিছু বেশি পড়ুয়া। তাদের পড়াশোনা কোনও ভাবেই সামলানো যাচ্ছে না।”

Advertisement

আশরফ জানান, নিয়ম অনুযায়ী ৪০ জন ছাত্র-পিছু এক জন শিক্ষক থাকার কথা। এখন কমবেশি ১৩৩ জন পড়ুয়া-পিছু এক জন শিক্ষক রয়েছেন! ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, “শিক্ষক কম থাকলেও ক্লাস বন্ধ হয়নি। তবে এক-এক জন শিক্ষককে অনেক বেশি ক্লাস নিতে হচ্ছে।” নতুন আংশিক শিক্ষকদের বেতন কোথা থেকে আসবে, দু’-এক দিনের মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে তা ঠিক করবে স্কুল।’’

শুধু অর্জুনপুর নয়, ওই জেলার বেশির ভাগ স্কুলেই শিক্ষকের অভাব প্রকট বলে অভিযোগ। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না-হলে অনেক স্কুলই শিক্ষকের অভাবে ধুঁকতে শুরু করবে। ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব, সাইকেল, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী-সহ যাবতীয় প্রকল্পে অর্থের অভাব ঘটছে না! অথচ স্কুলে যা সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেই পর্যাপ্ত শিক্ষকই নেই বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে। রাজ্য সরকার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না।”

এই সমস্যার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার অতি সম্প্রতি উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু যে-সব স্কুলে অনেক পদ খালি, সেগুলি কবে পূরণ হবে, তার কোনও সদুত্তর সরকারের কাছেও নেই। এই অবস্থায় সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে না-থেকে বহু স্কুল নিজেরাই আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগের রাস্তা ধরেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement