বাড়ির সামনে লটারির টিকিট হাতে ভীম ভূমিজ।
কোটি টাকা পেলে কী করবে? কেউ জানতে চায়নি তাঁর কাছে। পাবেন যে, তা ভাবেইনি তো কেউ। হুগলীর দাদপুরের দিনমজুর ভীম ভূমিজ নিজেও কি ভেবেছিলেন! তবু লটারির টিকিট কাটতেন। সুপ্ত ইচ্ছে ছিল একটা পাকা বাড়ি বানানোর। নিজের পাকা বাড়ি। সেই বাড়ি হবে। এতদিনে। কারণ লটারিতে কোটি টাকার পুরস্কার জিতেছেন দাদপুরের দিনমজুর ভীম।
কথায় আছে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন। ভাঙা মাটির ঘরে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কাটানো ভীম লাখ টাকার কথা ভাবেনইনি। স্বপ্ন বলতে একটাই— নিজের একফালি জমিতে একটা পাকা বাড়ি। কিন্তু দিনমজুরের কাজে রোজগার কোথায়। কাজের সন্ধানে রোজ বেরনো আছ। কিন্তু রোজ উপার্জনের নিশ্চয়তা নেই। যা পেতেন তা দিয়ে পরিবারের চারটে মুখের অন্ন সংস্থানেই সমস্যা হত মাঝে সাঝে। বাড়ি বানানো তো দূর অস্ত্। তাই লটারির টাকা পেয়ে প্রথমেই ভীম জানিয়েছেন, জমি কিনে একটা পাকা বাড়ি বানাবেন তিনি।
পরিবারের সদস্য বলতে চারজন। তিনি, তাঁর মেয়ে আর দুই নাতি। তবে রোজগেরে তিনি একাই। হাজার দু’য়েক যদি লেগে যায় এই ভেবেই লটারি কাটতেন। অভ্যাস বশেই ডিয়ার লটারির টিকিটটিও কেটেছিলেন। পরশু রাতে জানতে পারেন সেই টিকিটে পেয়ে গিয়েছেন ১ কোটি টাকা।
প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। তাই প্রতিবেশী ও শুভানুধ্যায়ী সুভাষ ঘরাকে বিষয়টি জানান। এরই মধ্যে জোটে নতুন বিপদ। কিছু লোক টাকা দিয়ে ওই টিকিট কিনতে আসে। বাধ্য হয়েই থানায় ফোন করে খবর দেন সুভাষ। গরীব মানুষ। বাড়ি ওই টিকিট সুরক্ষিত রাখার সুযোগটুকুও নেই। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তাই ভেবেই পুলিশকে জানান। পুলিশ এসে ওই লটারির টিকিট নিয়ে নিজেদের জিম্মায় রেখেছে। তারা জানিয়েছে, ভীম যাতে তাঁর প্রাপ্য টাকা পেয়ে যান তার ব্যবস্থা করবেন তাঁরাই।
ভীমের লটারি পাওয়ার খবরে খুশি তাঁর পাড়া পড়শিরাও। শুভেচ্ছা জানাতে আসা শুভাকাঙ্খীদের ভিড় উপচে পড়ছে তাঁর ভাঙা ঘরেই। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সারা জীবন অনেক কষ্ট করেছেন ভীম। সৎপথে থেকেছেন বরাবর। লটারির টাকা পেয়ে তাঁর আর্থিক সমস্যা মিটবে এতেই খুশি সবাই। ভীমও জানিয়েছেন, লটারির কিছু টাকা তিনি দান করতে চান এলাকার সামাজিক কাজের জন্য।
তবে আপাতত স্বপ্নের বাড়ি নিয়েই মশগুল তিনি।