মহম্মদ মোবারক ও জাকির শেখ। নিজস্ব চিত্র
রেলকর্মী হনুমান রায় খুনের ঘটনায় এক বছরের মাথায় সাজা ঘোষণা করল নিম্ন আদালত। মঙ্গলবার মালদহ অতিরিক্ত জেলা আদালত ওই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-সহ জরিমানার সাজা দেয়। বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ, হনুমান রায়কে খুনের দায়ে মহম্মদ মোবারক ও জাকির শেখ নামে দুই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। যদিও ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছেন দোষীদের পরিবার।
গত বছর দশমীর রাতে রেলের আবাসনে খুন হন হনুমান। নিজের ঘরেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই রেলকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মোবাইল নেটওয়ার্কের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্ত হিসাবে পুরাতন মালদহের বাসিন্দা মোবারক ও জাকিরকে গ্রেফতার করে ইংরেজ বাজার থানার পুলিশ। পরে ১৭ জন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে ওই দুই যুবককেই দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ওই খুনের উদ্দেশ্য হিসাবে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে সমকামীতার গল্প। দীর্ঘ এক বছর ধরে শুনানির পর মঙ্গলবার দোষীদের সাজা ঘোষণা করে মালদহ ফার্স্ট কোর্ট।
মোবারক ও জাকিরের যাবজ্জীবন-সহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ, জরিমানার টাকা না দিতে পারলে আরও দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হবে দোষীদের। যদিও ওই রায়ে খুশি নন দোষীদের পরিবার। তারা ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানান। জাকিরের বাবা হাসান শেখ বলেন, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ। সহজ সরল ছেলে। মোবাইল সারানোর কাজ করত। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি।’’ ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যাওয়ার কথা জানান সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায়ও। অন্য দিকে, এই রায় প্রসঙ্গে রাজ্যের কৌঁসুলী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোভিডকালে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি একটি দৃষ্টান্ত রায়।’’